দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সাম্প্রদায়িক উপাদান প্রত্যাহার এবং প্রগতিশীল কবি-সাহিত্যিক ও লেখকদের রচনা পুনঃসংযোজনের মাধ্যমে নতুন বই দেওয়ার দাবিতে আগামী ৩১ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

রাজধানীর ৬০-৭০ মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে রবিবার বিক্ষোভ সমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন।

পাঠ্যপুস্তক সাম্প্রদায়িকীকরণ ও প্রগতিশীল লেখকদের রচনা বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে প্রগতিশীল সংগঠনসমুহ এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।

জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উপাদান সম্বলিত বই প্রত্যাহার ও প্রগতিশীল কবি সাহিত্যিক এবং লেখকদের রচনা পুনঃসংযোজন করে নতুন বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে হবে। এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এতেও দাবি আদায় না হলে সব প্রগতিশীলদের নিয়ে কনভেনশন করে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া বইয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র, রণেশ দাশগুপ্ত, সত্যেন সেনদের মতো লেখকদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের গল্প থাকবে না অথচ রাজাকারের গল্প থাকবে এটা হতে পারে না।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন য়ুব ইউনিয়নের আব্দুল্লা আল কাফি, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকি আক্তার, শ্রাবণ প্রকাশনীর রবীন আহসান, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিংহ, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা মঞ্জুর মঈন, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের উপদেষ্টা সেকেন্দার হায়াত, বিপ্লবী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক হযরত আলী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ড. শফিউদ্দিন আহমেদ।

আব্দুল্লা আল কাফি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিবর্তে হেফাজতের বাংলাদেশে পরিণত করা হচ্ছে। তথাকথিত সাফল্যের নামে শিক্ষা ব্যবস্থার অধঃপতন ঘটানো হচ্ছে। সাফল্যের কথা বলে নিকৃষ্টমানের কাগজ দিয়ে বই ছেপে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর এই বই ছাগলময় করা হয়েছে।

লাকি আক্তার বলেন, ভোটের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগে পরিণত হয়েছে। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর হতে পারে না। হেফাজতে ইসলামকে নানা ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে সরকার। নজিরবিহীন ভুলে ভরা সাম্প্রদায়িক এই বইয়ের সঙ্গে জড়িত বেঈমানদের পদত্যাগ করতে হবে।

বিক্ষুব্ধ অবস্থান ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, হেফাজতে ইসলাম, চরমোনাই পীর এবং ওলামা লীগের চাপে কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়েছে। দেশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে শেখ হাসিনা ও মহাজোটকে দিয়ে এই অপকর্ম করিয়েছে তারা। হেফাজত ও চরমোনাই আপনাকে (শেখ হাসিনা) নিয়ে খেলছে। ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যাবে। তারা কখনোই আপনাদের ভোট দেবে না।

(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এপি/জানুয়ারি ১৫, ২০১৭)