দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : পেডোফিলিয়া বা শিশুদের প্রতি যৌনাসক্তি এক ধরনের মানসিক রোগ। বিশ্বব্যাপী এক হাজারেও বেশি শিশুদের প্রতি যৌনাসক্ত (পেডোফিল) মানুষকে সনাক্ত করেছে নেদারল্যান্ডসের একটি মানবাধিকার সংগঠন। ‘ভার্চুয়াল গার্ল সুইটি’র সাহায্যে এসব ব্যক্তিদের সনাক্ত করা হয়।

তেরে দেস হোমেস নেদারল্যান্ডস নামে ওই সংগঠন পুলিশের কাছে ওইসব ব্যক্তির পরিচয় হস্তান্তর করেছে।

ওই সংগঠনটি কম্পিউটার গ্রাফিক্সের মাধ্যমে তৈরি ‘সুইটি’ নামে ১০ বছরের ফিলিপাইনের এক মেয়ে শিশুর প্রোফাইল অনলাইনের চ্যাটরুমে দিয়েছিল।

এর ১০ সপ্তাহের মধ্যেই ৭১টি দেশের ২০ হাজার ব্যক্তি সুইটিকে ওয়েবক্যামের সামনে আসার আমন্ত্রণ জানায়।

তারা অর্থের বিনিময়ে ওয়েবক্যামের সামনে সুইটিকে যৌন কর্মকাণ্ডের প্রস্তাব দেয় বলে সংগঠনটির প্রধান অ্যালবার্ট জ্যাপ ভ্যান সান্তব্রিনক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

তেরে দেস হোমেস জানায়, সুইটির মাধ্যমে তারা নিজে থেকে কারো সঙ্গে চ্যাট করতে যায়নি। বরং ওই সব ব্যক্তি নিজে থেকে সুইটির সঙ্গে চ্যাট করে তাকে যৌন কর্মকাণ্ডের আহ্বান জানায়।

তবে, সুইটিকে অর্থের বিনিময়ে যৌন কর্মকাণ্ডের আহ্বান জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই তারা ওই ব্যক্তির সঙ্গে চ্যাট করা বন্ধ করে দিয়েছে বলে তেরে দেস হোমেস জানায়।

সুইটির সঙ্গে চ্যাট করার সময় গবেষকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো থেকে ওইসব ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন।

এসব তথ্যের ভিত্তিতেই গবেষকরা তাদের পরিচয় বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।

তবে, কোনো শিশুর কাছ থেকে অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয় না বলে জানালেন ‘ভার্চুয়াল গার্ল’ ক্যাম্পেইনের প্রধান হানস গুয়েট। তিনি বলেন, ‘এটা সবচেয়ে বড়ো সমস্যা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্যাতনের শিকার শিশুরা কোনো অভিযোগ করে না।’

শিশুযৌনাসক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সন্তানের বাবা, সংগীতজ্ঞ ও প্রকৌশলীও রয়েছে। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এমনকি ভারত, জাপান ও কোরিয়ার বাসিন্দাও রয়েছে।

হানস গুয়েট জানান, ‘১০ বছর বয়সী ফিলিপাইনের ওই শিশুটির জায়গায় নিজেকে ভাবতে গেলে স্তম্ভিত হতে হয়।’ তিনি আরো জানান, তাদের কারো কারো কার্যক্রম ও চাহিদা ছিল সত্যিই জঘন্য।

তেরে দেস হোমেস বিশ্বব্যাপী যেসব স্থানে এসব ঘটনা ঘটছে সেসব দেশের ইন্টারনেটের চ্যাটরুমগুলোতে নজরদারির জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে হানস গুয়েট বলেন, ‘এসব পেডোফিল ব্যক্তিরা মনে করে তারা আইনের উর্দ্ধে। তবে, বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ফ্রি হলেও আইনের উর্দ্ধে নয়।’

অনলাইনে নজরদারি নীতি গ্রহণের জন্য সরকারের ওপর চাপ দিতে তেরে দেস হোমেস এরইমধ্যে অনলাইনে স্বাক্ষর গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত সাড়ে সাত লাখ শিশু এই ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে। সূত্র: এএফপি।

(দিরিপোর্ট২৪/কেএন/জেএম/নভেম্বর ০৬, ২০১৩)