‘খুন ও গুমের ঘটনার সঠিক বিচার হবে’
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রতিটি খুন ও গুমের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করাই হবে বিএনপির কাজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত ও স্বজনহারা পরিবারের অভিশাপে এ জালেম সরকারের পতন ঘটবে।’ লক্ষ্মীপুরে বিচার বহির্ভূতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ১৯ দলীয় জোটের নেতাকর্মী ও সমর্থক নিহত এবং গুম হওয়ার ঘটনার তদন্তে এসে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিসহ ১৯ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম, নির্যাতন, হত্যা ও গুমের ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরা ওই সব পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা এবং এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বর্তমানে যাদেরকে সরকার গুম করে রেখেছে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।’
শওকত বলেন, ‘তদন্ত করতে এসে আমরা আজ শোকাহত। মা-বাবা, সন্তানের সামনে থেকে যখন একজন লোককে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আর বুঝতে বাকি থাকে না কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং কারা এর জন্য দায়ী।’
এ সময় সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সারাদেশে ১৯ দলের নেতাকর্মী হত্যা ও গুমের ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। শওকত মাহমুদ সেই তদন্ত কমিটির প্রধান।
কমিটির তদন্তকালে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, তদন্ত কমিটির মহাসচিব ও বিএনপির কর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ ফারুক খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সুকুমার বড়ুয়া, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান প্রমুখ।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে নিহত ১৯ দলীয় নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন। তালিকায় জামায়াত নেতা ডা. ফয়েজ আলম, ১৯ দলীয় জোটের সমর্থক মাহবুব আলম, সুমন, শিহাব, হরিপদ দেবনাথ, আব্দুল মান্নান, সুমন, শাহাদাত হেসেন রুবেল, আবুল হোসেন এবং র্যাবের সঙ্গে ‘কথিত’ বন্দুকযুদ্ধে নিহত জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান বাবুল ও দিদারুল ইসলাম দিদারও রয়েছেন। আর বিএনপি নেতা ওমর ফারুক যুবদল কর্মী ইকবাল হোসেন জুয়েল, বেলাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, রাজু, ও আব্দুল কাদেরের নাম রয়েছ।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তদন্ত কমিটির প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে তদন্ত দল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুর বাসবভনসহ বিভিন্ন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় হতাহত ও গুম হওয়া নেতাকর্মীদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গুম হওয়া বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের স্ত্রী পারভিন আক্তার, নিখোঁজ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জুয়েলের পিতা নুরুল ইসলাম, র্যাবের বন্ধুকযুদ্ধে নিহত আসাদুজ্জামান বাবুলের স্ত্রী আমেনা বেগম ও দিদারুল ইসলামের স্ত্রী সুমি আক্তার।
(দ্য রিপোর্ট/এনইউ/এসকে/এএল/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪)