দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলার রায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপথগামী সদস্যদের জন্য ম্যাসেজ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

সচিবালয়ে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

নারায়গঞ্জের সাত খুনের মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল সাঈদ তারেকসহ ২৬ জনের ফাঁসি ও বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় দেন।

এ রায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপথগামী সদস্যদের জন্য কোন ম্যাসেজ কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই এটা ম্যাসেজ। এটা ম্যাসেজ যে, কেউ বাদ যাবে না। যারা দুষ্কর্ম করবে, তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হোক, কিংবা যেই হোক। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নেই সেটাই ম্যাসেজ, সেটা ক্লিয়ার।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পর এর নৃশংস ও নির্মমতায় আমরা হতবাক হয়েছিলাম। আমার প্রতিক্রিয়া আপনাদের মতোই। আমাদের তদন্তকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী সঠিকভাবেই চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য চার্জশিট দিতে পেরেছিল। সেজন্য একটি জাতি ও ভিকটিম যারা তারা সঠিক বিচার পেয়েছে।’

র‌্যাব প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর দায় তাদের উপর আসে কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান হিসেবে তো কোন প্রশ্নই আসে না। প্রতিষ্ঠান দায়দায়িত্ব নেবে কেন? প্রতিষ্ঠান যদি দায়দায়িত্ব নিত তবে এর (বিচারের) বিরুদ্ধে দাড়াত। যারা দণ্ডিত হয়েছেন তাদের সমস্ত সঠিক তথ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে দিয়েছে। এজন্য এগুলো ধরার সুযোগ হয়েছে, চার্জশিট দেওয়ার জন্য। তাদের দুষ্ককর্মগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

এ রায়ের পর র‌্যাবের কার্যক্রমে কোন পরিবর্তন আনা প্রয়োজন মনে করেন কীনা- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘র‌্যাবের এতগুলো সদস্য ছিল, এরা সবাই বিপথগামী। কোন আইনই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উৎসাহিত করে না এসব কর্মকাণ্ড করতে বরং নিরুৎসাহিত করে। তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা নিজেরাই বিপথগামী হয়েছে। কাজেই কোন আইন পরিবর্তনের কোন প্রশ্ন আসে না।’

‘আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে যদি তারা বের হয়ে যেত তবে আইন পরিবর্তনের প্রশ্ন আসত।’

পলাতক আসামিদের খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীমকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

নজরুলের শ্বশুর শহীদুল অভিযোগ তোলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন অর্থ দিয়ে র‌্যাবের মাধ্যমে তার জামাতাকে হত্যা করিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এআরই/এনআই/জানুয়ারি ১৬, ২০১৭)