ফরিদপুর প্রতিনিধি : জেলার সদরপুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কারণে মুক্তিযোদ্ধা যাঁচাই-বাছাই কার্যক্রম দু’দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) মুক্তিযোদ্ধা যাঁচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা রহমান মুক্তিযোদ্ধা যাঁচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, যাঁচাই-বাছাই কমিটির সদস্য নাজমুল হাসানকে নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে সে বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না। এটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। তবে যেহেতু বির্তক উঠেছে সেজন্য যাঁচাই-বাছাই কার্যক্রম দু দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে আবেদন নেওয়ার কাজ চলবে।

এর আগে শনিবার সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করে। সকালে সদরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে এবং পরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. এ গফফার মিয়ার নেতৃত্বে তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।

সমাবেশ থেকে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাঁচাই-বাছাই কমিটিতে উপজেলা কমান্ডারকে না রাখা অশুভ ইঙ্গিত। যাকে উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে রাখা হয়েছে সেই নাজমুল কবির মনির উপজেলা কমিটির কোনো সদস্য নন। তার বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকায় রাখার অভিযোগ রয়েছে। তাকে অবিলম্বে সরিয়ে না দেওয়া হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বক্তারা আরও বলেন, নাজমুল কবির মনির অন্য উপজেলার তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। সে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে সম্মানী ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পায়। অবিলম্বে যাঁচাই-বাছাই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি করতে হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী শফিকুর রহমান বলেন, মনিরকে কমিটিতে রেখে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। তাকে কমিটিতে রাখার মানেই হচ্ছে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র। দ্রুতই এ কমিটি বাতিল না করা হলে মুক্তিযোদ্ধারা রুখে দাঁড়াবে।

সদরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. এ গাফফার মিয়া বলেন, নাজমুল কবির মনির ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তাদের তালিকাভুক্ত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমরা এ কমিটি মানিনা।

এদিকে নাজমুল কবির মনির তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাড়ী সদরপুরে এবং আমি এ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ভোটার।

উল্লেখ্য, সদরপুর উপজেলায় ২৭৩ জন ভাতাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। নতুন করে তালিকা ভুক্তির জন্য ৩১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শনিবার পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করেছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এস/জানুয়ারি ২১, ২০১৭)