গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত রবিবার (২২ জানুয়ারি)।

বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে ইতোমধ্যে টঙ্গীতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে।

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, সকালে মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান শুরু করেছেন বাংলাদেশের মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। এরপর শুরু হয় হেদায়াতি বয়ান। হেদায়াতি বয়ান তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা ওমর ফারুক। হেদায়াতি বয়ান এবং আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ কান্ধলভি। আর এ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তথা এবারের ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা।

দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার ঢাকাসহ ১৭ জেলার লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নিচ্ছেন। অংশ নিচ্ছেন বিদেশি মুসল্লিরাও। আজ (২২ জানুয়ারী, রোববার) সকাল পর্যন্ত বিশ্বের ৯৫টি দেশের ৬ হাজার ৩৬০ জন মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে এসে পৌঁছেছেন। মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ জমায়েতে অংশ নিতে কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি মুসল্লি বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। আখেরি মোনাজাতে শরীক হতে অনেকে শনিবার টঙ্গীতে পৌঁছেছেন। কেউ কেউ অবস্থান নিয়েছেন টঙ্গী ও আশপাশ এলাকার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে।অবস্থান নিচ্ছেন আশপাশের ভবনে।

এ দিকে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমামুখি সড়ক-মহাসড়কে গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ রাখায় মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকে মুসল্লিরা হেঁটেই ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত ইজতেমা মুখি মানুষের ঢল অব্যাহত থাকবে।

বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গী জংশন দিয়ে চলাচলকারী সকল ট্রেন যাত্রা বিরতি দিচ্ছে। আখরি মোনাজাত উপলক্ষে এ জংশন দিয়ে ১৪টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করছে। এ ছাড়া বিআরটিসির ২২৮টি বাস যাতায়াত করছে।

দ্বিতীয় পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় শুক্রবার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ শামীমের বয়ানের মধ্য দিয়ে। দুপুরে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে ইমামতি করেন ভারতের হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ কান্ধলভি। এ দিন বাদ জুমা বাংলাদেশের মাওলানা ফজলুল হক, বাদ আসর দিল্লীর মাওলানা রবিউল হক ও বাদ মাগরিব হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সা’দ কান্ধলভি বয়ান করেন। দ্বিতীয়দিন শনিবার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা জমশেদ, বাদ যোহর মাওলানা মোরসালিন, বাদ আছর মাওলানা ইউসুফ এবং বাদ মাগরিব মাওলানা সা’দ কান্ধলভি বয়ান করেন। মূল বয়ান উর্দূতে হলেও বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ওই বয়ান বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।

এর আগে একই ময়দানে গত ১৩ জানুয়ারি শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। প্রথম পর্বে ঢাকা, গাজীপুরসহ ১৭ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেন। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল প্রথম পর্ব। চার দিন পর ২০ জানুয়ারি শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব।বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মুসল্লী অংশ নিয়েছেন এতে।

আখেরী মোনাজাতের পর ইসলাম প্রচারে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়বেন তারা।

দুটি পর্বে মোট ১০ জন মুসল্লী ইজতেমায় মৃত্যুবরন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম পর্বে ৯জন, আর দ্বিতীয় পর্বে একজনের মৃত্যু হয় বার্ধক্য ও শারিরিক সমস্যা জনিত রোগে।

(দ্য রিপোর্ট/এআরই/জানুয়ারি ২২, ২০১৭)