দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : তথ্য-প্রযুক্তি আইনে নাসরিন সুলতানা (২৩) নামে মোহাম্মদপুর এলাকার এক তরুণীর করা মামলায় বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে রবিবার সকালে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

আরাফাত সানির সঙ্গে ওই তরুণীর ২০১০ সালে পরিচয় হয় এবং ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। কিন্তু সম্প্রতি (২০১৬ সালের শেষের দিকে) ওই তরুণী সানিকে বিয়ের ব্যাপারটি পরিবারের সদস্যদের জানানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সানি ‘NASRIN SULTANA’ নামে একটি ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে তাদের দুজনের অন্তরঙ্গ ও ব্যক্তিগত একক ছবি ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে দেখিয়ে হুমকি ও ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে আসছিল। এ জন্য চলতি মাসের ৫ জানুয়ারি সানির বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলাটি করেন নাসরিন সুলতানা।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাত বছর আগে ২০১০ সালে পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্টতার সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে তারা দুজন দুজনকে ভালবেসে ফেলেন। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর দুই পক্ষের অভিভাবকদের না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর সানি দুই পরিবারের সাথে আলাপ করে নাসরিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নিয়ে যায়নি। বরং পরিবারকে জানাতে বললে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এরপর নাসরিনের পরিবার তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করলে তিনি (নাসরিন) সানিকে বলেন, হয় পরিবারকে জানিয়ে আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নিয়ে যাও, না হলে বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন করো।

এ ঘটনার পর তা না করে সানি গত বছরের ১২ জুন রাত ১টা ৩৫ মিনিটে ‘NASRIN SULTANA’ নামে একটি ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে তাদের দুজনের অন্তরঙ্গ ও ব্যক্তিগত একক মুহূর্তের কিছু ছবি নাসরিনের আসল ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে হুমকি ও ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে। ওই ভূয়া ফেসবুক আইডিটি সানির মোবাইল নম্বর ‘০১৬৭১৪৭৪০৭৫’ থেকে খোলা হয়েছিল এবং যে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করা হচ্ছিল, সেগুলো শুধুমাত্র সানির কাছেই ছিল।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জানে আলম মুন্সী দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় তাকে (সানি) রবিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা ও তাদের দুজনের সম্পর্কের যথেষ্ট প্রমাণাদি পুলিশকে দিয়েছেন নাসরিন।

এদিকে, ক্রিকেটার আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তার রবিবার মোহাম্মদপুর থানার সামনে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন তার ছেলে নির্দোষ, কোন অপরাধ করেনি। টাকার লোভে ওই তরুণী ছেলেকে ফাঁসিয়েছে।

তিনি বলেন, ওই তরুণী পুলিশের সাথে যোগসাজোশ করে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। পুলিশ যদি বিষয়টি তদন্ত করে তাহলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে। পুলিশ ওই তরুণীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মোবাইল থেকে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া ও হুমকির প্রমাণও পাওয়া গেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপি/জানুয়ারি ২২, ২০১৭)