দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বার কাউন্সিলকে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করতেও বলা হয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার বরাবরে এ চিঠি দেন।

চিঠিতে বলা হয়, গত ১৮ জানুয়ারি মানবপাচার আইনের এক মামলায় গ্রেফতার আইনজীবী ফজলুল কাদের ও তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারের জামিন ও রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করার ঘটনায় চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির কতিপয় আইনজীবী নজিরবিহীনভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পেশাগত অসদাচরণ করেন।

তাদের মধ্যে আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা আদালতের নথি ছুঁড়ে মারেন। আইনজীবী চন্দন বিশ্বাস, সাকিল, আউয়াল খান, টিআর খান, প্রদীপ দাশ, শিবলী, মাসুদ পারভেজ, মুস্তাফিজসহ আরও কয়েকজন আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান প্রদান ও বিচারকদের নাম উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় আদালতকক্ষ, বিজ্ঞ বিচারকের খাস কামরা ভাঙচুর করে আদালতের মূল্যবান নথি তছনছ করাসহ বিজ্ঞ বিচারকেকে তার কক্ষে অববরুদ্ধ করে রাখেন মর্মে জানা যায়।

সংবাদ কর্মীরা ঘটনার ছবি তুলতে গেলে বিজ্ঞ আইনজীবীগণ তাদের বাধা দেন। সাংবাদিক উজ্জ্বলকান্তি ধরের ক্যামেরা কেড়ে নেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

২০০০ সালে অনুরূপ ঘটনায় ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা গ্রেফতার হন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বর্তমান ঘটনায় অদ্যাবধি কোনো মামলা দায়ের হয় নাই। আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের দায়িত্ব।

আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধান করবে। নতুবা এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো যাবে না। আইনের শাসন ভেঙে পড়বে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে চট্টগ্রামে আদালতের এজলাসকক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলামকে। এই কমিটির সদস্য সচিব হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ। এছাড়া চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে হুসেইন মোহাম্মদ সাজ্জাদকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এপি/এনআই/জানুয়ারি ২৩, ২০১৭)