পরকীয়া ছিল কিনা খতিয়ে দেখার অনুরোধ মিতুর পরিবারের
চট্টগ্রাম অফিস : চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে তার স্বামী পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বাবুল আক্তার কিংবা মিতু নিজেই পরকীয়ার জড়িয়েছিল কিনা তা যাচাই করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন মিতুর মা-বাবা।
সিএমপি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) মিতু হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে এসে ডিবি কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, খুনী যেই হোক না কেন, বাবুল বা তার পরিবারের কোনো সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব হোক, যেই হোক, তা বের করারও দাবি জানিয়েছি আমরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন ও মা শাহেদা মোশাররফকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) মো. কামরুজ্জামান। বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা ৪ ঘণ্টা মিতু হত্যার বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেছেন, আমার মেয়ের স্বভাব-চরিত্র কেমন ছিল তা তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি, মেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো, পর্দা করতো, হিজাব পরতো। বাবুলের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে কিনা, নাতি-নাতনিদের সাথে যোগাযোগ হয় কিনা, বাবুল কখন আসে তা জানতে চেয়েছেন কর্মকর্তা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছি মিতু হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরকীয়ার কোনো ঘটনা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হোক।
মিতুর বাবা হিসেবে পরকীয়া নিয়ে সন্দেহের কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা তো হতেই পারে। এখনকার সমাজে খুন-খারাবিসহ নানা অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে পরকীয়ার কারণে। তাই পরকীয়ার বিষয়টা অসম্ভব কিছু না। সেটা বাবুলের দিক দিয়ে হতে পারে, মিতুর দিক দিয়েও হতে পারে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, পরকীয়ার বিষয়টা নতুন কোনো বিষয় না। উনি (মিতুর বাবা) বলার আগে থেকেই আমরা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছি। বাবুল আক্তার বা মিতুর কোনো পরকীয়ার বিষয় ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে ২২ ডিসেম্বর সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনকে মিতু হত্যা মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তারও সিএমপিতে এসে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। স্ত্রী খুনের মামলার বাদী হিসেবে ওইদিন বাবুল আক্তার সিএমপিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ওআর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও গত ৮ মাসে হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্য পুলিশ উদঘাটন করতে পারেনি।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জেডটি/এনআই/জানুয়ারি ২৬, ২০১৭)