দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পার্বত্য চট্টগ্রামের নাব্য হারানো নদীগুলোতে খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি স্থলবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে।

সচিবালয়ে রবিবার (২৯ জানুয়ারি) পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় নদীর সীমানা নির্ধারণ, নাব্য বৃদ্ধি এবং স্থলবন্দর নির্মাণ সংক্রান্ত সভা শেষে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেছেন, ‘সবাই আমরা একমত হয়েছি পার্বত্য চট্টগ্রামের নদীগুলো খনন করতে হবে। নাব্য ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা) মাধ্যমে শুরু করব। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনও কার্যক্রম শুরু করবে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এ ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করবেন।’

পার্বত্যাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নদী খননের উপায় নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে শাজাহান খান বলেছেন, ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের মাধ্যমে নদীর সীমানা নির্ধারণ করব। বিআইডব্লিউটিএর মাধ্যমে নদীর খনন কাজ শুরু করব।সিদ্ধান্ত নিয়েছি নদী খননের পর উত্তোলিত মাটি দিয়ে নদীর তীরবর্তী জায়গাগুলো ব্যবহার উপযো্গী করা হবে।’

কাচালং, মাইনি, কর্ণফুলী, ইছামতি, চেঙ্গি, মাতামুহুরী, সাঙ্গু, ফেনী, হালদাসহ পার্বত্য এলাকার অন্যান্য নদীগুলো খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘অনেক নদীর শাখা বা উপনদী আছে। আমরা দেখব সেগুলোর কোনগুলো খনন করা যায়। এজন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের যে সহায়তা প্রয়োজন হবে তাও আমরা নেব।’

তিনটি স্থলবন্দর হচ্ছে

খাগড়াছড়ির রামগড়ে একটি স্থলবন্দর নির্মাণ করা হবে জানিয়ে শাজাহান খান বলেছেন, ‘রামগড়-সাব্রুম স্থল বন্দরের কাজ আমার শিঘ্রই শুরু করতে চাই। খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন।’

রামগড় স্থল বন্দরের ওপাশে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম এলাকা বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

এ ছাড়া বান্দরবানে ঘুমধুম স্থলবন্দর ও রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘কীভাবে আমরা বন্দরগুলো করব, এজন্য আলোচনা চলছে।’

সভায় জানানো হয়, প্রস্তাবিত ঘুমধুম স্থলবন্দরের অপরপাশে মিয়ানমারের তুমব্র এবং তেগামুখ বন্দরের ওপাশে ভারতের মিজোরামের দেমাগ্রী এলাকা।

এ স্থলবন্দরের ফলে বাংলাদেশ কি সুবিধা পাবে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘মালামাল কিন্তু এমনি ওখানে আদান-প্রদান হয়। যেটা হয় অবৈধভাবে। এটা বৈধভাবে করলে উভয় দেশের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা হবে। মালামাল আনা-নেওয়ায় কোনো আইনগত অসুবিধায় তারা পড়বেন না।’

বিশ্বব্যাংক স্টাডি করে এসব জায়গায় বন্দর করার জন্য মতামত দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন শাজাহান খান।

নৌপরিবহন মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী উ শৈ সিং, নৌপরিবহন সচিব অশোক মাধব রায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. আতাহারুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান এম মোজাম্মেল হক ও তিন পার্বত্য জেলা (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এস/জেডটি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৭)