জাবির উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে শরীফপন্থীদের নিরঙ্কুশ বিজয়
জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপাচার্য প্যানেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থীরা জয়লাভ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনের সিনেট হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকালে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থী প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে মোট ৯৩ জন সিনেট সদস্যদের মধ্যে ৬৯ জন সিনেটর ভোট প্রদান করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল হোসেন এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ৪০ ভোট পেয়ে যৌথভাবে প্রথমস্থান অধিকার করেন। ফারজানা ইসলাম ও আবুল হোসেন যৌথভাবে ৪০ ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে ফারজানা ইসলামকে প্রথম ও আবুল হোসেনকে দ্বিতীয় ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক আবু বকর সিদ্দীক।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আমির হোসেন ৩৩ ভোট পেয়ে ২য় স্থান লাভ করেন। তিনজনই সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির প্যানেলের।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. এম এ মতিন ২৩ ভোট পেয়েছেন। বর্তমান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আফসার আহমদ পেয়েছেন ১৫ ভোট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক বায়েস পেয়েছেন ২৫ ভোট। এরা সকলেই সদ্য পদত্যাগকারী উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনপন্থী।
নির্বাচনের ফল বৃহস্পতিবারই আচার্যের কাছে ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক আবু বকর সিদ্দীক। নির্বাচিত ৩ জন থেকে তিনি তার পছন্দের একজনকে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
এ বিষয়ে নির্বাচনে প্রথমস্থান অধিকারী ফারজানা ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, নির্বাচনে জয়ের পেছনে যারা কাজ করেছে, তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে চাই।
দ্বিতীয়স্থান অধিকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, আন্দোলনকারী সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে চাই। এ রকম একটি প্যানেল গঠন করার জন্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির স্যারকে অশেষ ধন্যবাদ।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের ৭৩নং ধারা অনুসারে সিনেট প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বিধান থাকলেও ৫ জন জাকসু প্রতিনিধি না থাকায় বর্তমানে ৮৮ জন সিনেট সদস্যের মধ্যে ৬৩ জনই মেয়াদোত্তীর্ণ এবং বিভিন্ন কারণে পদশূন্য রয়েছে ১১টি। মেয়াদোত্তীর্ণ ৬৩ জনের মধ্যে রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট ২৫ জন, শিক্ষক প্রতিনিধি ৩৩। যা নির্বাচনের সবচেয়ে সমালোচিত দিক ছিল।
উল্লেখ্য, গত ২২ জানুয়ারি ড. এম এ মতিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩-এর ১১(১) ধারা অনুযায়ী বিদ্যমান সিনেট সদস্যদের দ্বারা বিশেষ সভা আহ্বান করে ৩০ দিনের মধ্যে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির ২৯ দিনের মাথায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএইচও/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪)