কমলেশ রায়। সায়েন্স ফিকশন, রম্য, কিশোর গল্প-উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধের গল্পসহ তার লেখা বইয়ের সংখ্যা পঁচিশটির বেশি। তিনি পেশায় সাংবাদিক। বর্তমানে সকালের খবরে বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কাজ করেছেন সংবাদ ও যুগান্তরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করেছেন। লেখালেখি, সাংবাদিকতা ও বইমেলা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হোসেন শহীদ মজনু

এবার মেলায় কেন কোনো বই আসেনি?


কারণ পেশাগত ব্যস্ততা। খুব বেশি লিখতে পারিনি। পাণ্ডুলিপি তৈরির সময় মেলেনি। কাব্য করে বলা যেতে পারে-ব্যস্ততা আমাকে দেয় না লেখার অবসর!

সর্বশেষ প্রকাশিত বইটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

বইটির নাম ‘কচিপাতার নূপুর’। ছোটদের বই। বইটির বিশেষত্ব হচ্ছে এতে কোনো যুক্ত অক্ষর নেই।

প্রকাশনা বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা থাকলে বলুন

ভালো-মন্দ মেশানো। প্রকাশক পেতে কখনও অসুবিধা হয়নি। তবে তাদের কেউ কেউ পেশাদার হয়ে ওঠতে পারেনি। কিংবা অন্যভাবে বলা যায়, ইচ্ছে করেই অনেকে সেটা হয়ে ওঠতে চান না। আর তখন হিসেবের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে যায়। উল্টো ছবিও আছে। পাঁচশ’ কপি বই বিক্রি হলেই দু’একজন ফোন দেন। তাদের হিসাব টনটনে। এটা লেখকদের জন্য আশার কথা।

বইকে কীভাবে প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া যায় বলে মনে করেন

পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার জরুরি। বইমেলাও দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বই কেনার ও পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

মেলায় বই কেনার পরিকল্পনা নিয়ে বলুন।

আমার তো ইচ্ছে মেলার সব বই একটা করে কিনি। সেটা তো আর হবে না। বেছে কিছু বই কিনব।

বইমেলার স্থান সম্প্রসারণের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

সময়োচিত, প্রশংসনীয় সাহসী সিদ্ধান্ত।

কেন লেখেন।

মনের তাগিদে।

লেখালেখির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী।

আজীবন লেখার চেষ্টা করব। কতটুকু পারব জানি না। সৃষ্টিশীল কাজ পরিকল্পনা করে করা কঠিন।

সাংবাদিকতা করছেন। আপনি কী মনে করেন সাংবাদিকতা লেখালেখির ক্ষতি করে অথবা সাংবাদিকতায় থাকলে লেখালেখিতে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়।

সাংবাদিকতা বেশ পরিশ্রমের কাজ। সৃজনশীলতাকেও অনেকখানি নিংড়ে নেয়। সে ক্ষেত্রে এক ধরনের ক্ষতি তো হয়ই। আর এ পেশায় থাকলে ‘বিশেষ সুবিধা’ না, সাময়িক কিছুটা সুবিধা পাওয়াও যায়, এটা বলা যেতে পারে। শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত একটা কথা বলতেন। দাদার ভাষ্য হলো, ‘লেখা শেষ হওয়া মাত্রই আমার দায়িত্ব শেষ। তারপর লেখাই তার প্রাপ্য আদায় করে নেবে। ঠিক কচ্ছপ যেটি করে। বালুতে ডিম পেড়ে সাগর বা জলাশয়ে ফিরে যায়। তারপর ডিম ফুটে একাই বাচ্চা বের হয়।’ আমিও তাই বিশ্বাস করি। কোনো লেখা নিয়ে সাময়িকভাবে কৃত্রিম সোরগোল হয়ত সৃষ্টি করা যেতে পারে, তবে তা ক্ষণস্থায়ী। সময়ের বিচারে শেষ পর্যন্ত যোগ্য লেখাটাই টিকে থাকবে। বিজ্ঞাপন, প্রচারণা, বিশেষ আনুকূল্য বা কোনো খবরদারিই এখানে খুব একটা কাজে আসে না।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এইচএসএম/এএল/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪)