দশটি ভাষা শেখাতে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ৩টি ডিজিটাল ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হচ্ছে। ভাষার মাসে (ফেব্রুয়ারি) নেওয়া হচ্ছে এ উদ্যোগ।

ভাষাগুলো হচ্ছে-বাংলা, ইংরেজি, আরবি, চাইনিজ, জাপানিজ, কোরিয়ান, মালয়েশিয়ান, ফ্রেঞ্চ, জার্মান ও রাশিয়ান ভাষা।

এজন্য একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়িত হলে নির্বাচিত ভাষাগুলোর জন্য বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে কারিকুলাম ও সিলেবাস তৈরি করা হবে। ফলে বহুভাষায় পারদর্শী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা যাবে, যারা বিশ্বের অন্য জাতিসমূহের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকবে এবং দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রক্রিয়াকরণ শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। ইতিমধ্যেই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘এটি (ফেব্রুয়ারি) আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এই সময়ে এ ধরনের একটি প্রকল্প প্রস্তাব ভাল উদ্যোগ বলে মনে করি। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প হবে এটি। এখন হয়তো দশটি ভাষা শেখানো হবে, প্রয়োজনে পরবর্তীতে ভাষার সংখা আরও বাড়তে পারে। যারা যে দেশে যাবেন, তারা সেই দেশের ভাষা শিখে যেতে পারলে অনেক ভাল কাজ যোগার করতে পারবেন।’

প্রকল্প প্রস্তাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আমরা বিশ্বায়নের যুগে বাস করছি। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় কথা বলতে পারলে সেদেশের শ্রম বাজারে প্রবশ করা সহজ হয়। ব্যক্তিগতভাবে অথবা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় অথবা শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যারা বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন তারা সরকারিভাবে ভাষার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে বিদেশি ভাষায় যোগাযোগ করা সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা, ট্যুরিজম ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিদেশি ভাষায় দক্ষতা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে। বাংলাদেশ সরকারের ভিশন-২০২১ এবং এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তাই বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিদেশে গমন নির্ধারিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনন্সিটিউটে সম্পূর্ণ সরকারিভাবে বিনা খরচে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হবে সরকারের জন্য একটি বড় সাফল্য।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হলো-প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি ক্রয়, কম্পিউটার সামগ্রী কেনা, অফিস সরঞ্জামাদি, পরিচালন ব্যয় মেটানো, স্থানীয় প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, পরামর্শক ব্যয়, কর্মকর্তা ও স্টাফদের বেতন, গাড়ি ক্রয়, আসবাবপত্র ক্রয়, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা।’

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে জানিয়েছেন, চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশ গমনেচ্ছুদের ভাষা প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এজন্য প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) বেশ কিছু ক্রুটি রয়েছে। এসব ক্রুটি সংশোধনের শর্তে প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/জেডটি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭ )