চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট পুনঃগণনায় নাটকীয়ভাবে হেরে গেছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী নাজিম উদ্দিন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর তুলনায় ৬ ভোট বেশি পেলেও তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়নি। পরে একদিন পর ভোট পুনঃগণনায় মাত্র এক ভোটে হেরে যান তিনি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এডভোকেট মোহাম্মদ আবু হানিফকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

 

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে নির্বাচন কমিশানার এ ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের রতন কুমার রায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

এর ফলে ১৯টি পদের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ১০টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বাকি ৯টি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্রার্থীরা জয়ী হন।

অবশ্য সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সমন্বয় পরিষদের কামরুন নাহার ও সমমনা পরিষদের মোহাম্মদ আলী সমান ভোট পেয়েছেন। দুইজনই গঠনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী ছয়মাস করে দায়িত্ব পালন করবেন। দুইজনই এক হাজার ১৯৯ ভোট করে পেয়েছেন।

জানা গেছে, রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোট গ্রহণ শেষে গভীর রাত পর্যন্ত গণনা চলে। গণনা শেষে সভাপতি পদে রতন কুমার রায়কে নির্বাচিত ঘোষণা করলেও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ ভোটে এগিয়ে থাকা নাজিম উদ্দিনকে বিজয়ী হিসাবে মানতে নারাজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এডভোকেট মোহাম্মদ আবু হানিফ। তিনি এ পদে ভোট পুনঃগণনার দাবি জানালে বিরোধ বাধে। এনিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি নির্বাচন কমিশনার। পরে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দিনে পুনঃগণনার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু গণনার পরও সোমবার দিনভর কোন ফলাফল ঘোষণা দেয়নি নির্বাচন কমিশনার। এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। অবশেষে সোমবার রাতে সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে ১ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

পুনঃগণনা শেষে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অ্যাডভোকেট আবু হানিফ ১৩৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ঐক্য পরিষদের নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ১৩৮২ ভোট পান। অথচ নির্বাচন শেষে প্রথম গণনায় নাজিম উদ্দিন ৬ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

এ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন বলেন, ২৪ ঘন্টার ভিতরেই বিজয়ীকে পুনঃগণনার নামে ১ ভোটে অন্যায়ভাবে পরাজিত করার এই ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা ভুলবো না।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের অ্যাডভোকেট রতন রায় পেয়েছেন ১১৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের এ এস এম বদরুল আনোয়ার পেয়েছেন ১০৩৮ ভোট।

নির্বাচনে ঐক্য পরিষদ থেকে বিজয়ীরা হলেন- সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মহিউদ্দিন হক চৌধুরী, পাঠাগার সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম ভুইয়া, সদস্য পদে ইমতিয়াজ আহমেদ জিয়া, মাহমুদুল আলম চৌধুরী, মোস্তফা কামাল, মো. এরফানুর রহমান ও আলাউদ্দিন আল আজাদ।

সমন্বয় পরিষদের অপর বিজয়ীরা হলেন- সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. ফয়েজ উদ্দিন চৌধুরী এবং পাঁচটি সদস্য পদে-এম সালাউদ্দিন মনসুর চৌধুরী রিমু, অভিজিৎ আচার্য, খাইরুন্নেসা আক্তার নিশা, অসীম শর্মা ও মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী দোয়েল।

এবারের নির্বাচনে ৩ হাজার ৮০১ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৩ হাজার ১০৪ জন ভোটার।

(দ্য রিপোর্ট/এমকে/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭)