একুশের চেতনার দীপ্তি বইমেলায়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বইমেলা লোকে লোকারণ্য। শুক্রবার একে তো ছুটির দিন, তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অমর চেতনা। তাই সকাল সাড়ে ৭টায় প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়ার পর পরই মেলায় বইপ্রেমীদের যে ঢল নেমেছিল, তা রাত ৮ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। মানুষ মেলা ছেড়ে যাওয়ার তুলনায় সারাদিনই আগতদের পরিমাণ ছিল বেশি।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মেলায় আগত সব বয়সী মানুষের হাতে শোভা পায় ফুল অথবা রকমারি ভঙিমায় আঁকা নানা আল্পনা। প্রতিদিনের মতো দর্শনার্থীদের প্রথম আগ্রহ লক্ষ করা যায় মেলার এক অঙ্গন বাংলা একাডেমি। তারপর নব্য প্রসারিত প্রাঙ্গণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাজাত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। একদিকে চোখে পড়ে স্টলে স্টলে বই কেনাবেচার দৃশ্য। অন্যদিকে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে একই ফ্রেমে বন্দি হবার চেষ্টা।
এমন দিনে কেনাবেচা কেমন হচ্ছে তা জানতে চাইলে ব্যস্ততার সঙ্গে সব স্টলের বিক্রেতাদের একই উত্তর, ‘ভালো, খুব ভাল!’
দর্শনার্থীদের এমন ভিড় আর পাঠকদের বইকেনার আগ্রহ দেখে তিননেতার মাজার প্রাঙ্গণে বিহবল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কয়েকজন ভিনদেশি। কথা বলে জানা যায়, তাদের বাড়ি অষ্ট্রেলিয়ায়। ম্যাকমিলান, ক্ল্যামিন ও নিক্সন। এখানে এসে লাখ জনতার ভিড় দেখে জানালেন অনুভূতির কথা। ম্যাকমিলান বলেন, ‘(ভাবার্থ) শুনেছি বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, এদেশের শিক্ষারমানও আশাব্যঞ্জক নয় কিন্তু এই উপস্থিতি আজ আমার মধ্যে একটি বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। সেটি হচ্ছে এখানে সংঘাত হানাহানি হয় বটে কিন্তু মুক্তচিন্তার সমাবেশও ঘটে। সুতরাং অতীতের মতো আবারও নতুন কিছু দেখাবে এখানকার মানুষ।’ তার এ কথার সঙ্গে মাথা নাড়িয়ে সায় দেয় তার দুই সহকর্মী ক্ল্যামিন ও নিক্সন।
লাখ মানুষের ভিড় ঠেলে হাতে হাতে বই নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সবার মুখেই উচ্চারিত হতে থাকে, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি?’
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এইচএসএম/ফেব্রুয়ারি, ২১, ২০১৪)