সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে পুলিশের হেফাজতে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ওই দিনমজুরের নাম ঠাণ্ডু মিয়া (৪৫)। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দেওজান সলিল গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে।

ওই দিনমজুরের পরিবারের দাবি-পুলিশের মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশের দাবি-মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের শ্বশুর রায়হান আলী জানান, বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চৌহালী উপজেলার বন্যা মোড়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন ঠাণ্ডু মিয়া। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চৌহালী থানার এএসআই রবিউল ইসলাম সাদা পোশাকে মোটরসাইকেলে করে সেখানে এসেই ঠাণ্ডুকে হাতকড়া পরিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। স্থানীয়রা আটকের কারণ জানতে চাইলেও তিনি কিছু বলেননি। তারপর জোর করে ঠাণ্ডুকে মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে নিয়ে যান।

শ্বশুর রায়হান আলী অভিযোগ করেন-ঠাণ্ডুকে এএসআই রবিউল অন্যায়ভাবে আটকের পর মারধর করে হত্যা করেছে। ঠাণ্ডুর বিরুদ্ধে কোনো থানায় কোনো মামলা নেই। তিনি জামাতা হত্যার বিচার চান।

এ ব্যাপারে এএসআই রবিউল ইসলাম বলেছেন, থানার ওসির নির্দেশে ঠাণ্ডুকে আটক করেছিলাম। মোটরসাইকেলে আনার পথে তিনি লাফ দিয়ে পালানোর সময় মাথায় গুরুতর জখম হন। তাকে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রামপ্রসাদ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠাণ্ডুকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই ঠাণ্ডুর মৃত্যু হয়। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তার মাথায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।

এ ব্যাপারে চৌহালী থানার ওসির মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার এসপি মিরাজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিহত দিনমজুর কোনো এজাহারভুক্ত মামলার আসামি ছিলেন না। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করে থানায় নেওয়া হচ্ছিল। মোটরসাইকেল থেকে লাফ দেওয়ার কারণে রাস্তায় পড়ে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। নিহত দিনমজুর ঠান্ডু মিয়ার লাশ চৌহালী থানায় আনা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭)