দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আসামিকে আদালতে হাজির করায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯ মার্চ স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

 

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দা সাবিনা আহমদ (মলি)। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ১০ আসামির জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এইচ মো. নূরুল হুদা জায়গীরদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ। কিন্তু এরই মধ্যে ওই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় বুধবার মামলাটি আমরা বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য আবেদন করি।

তিনি আরও বলেন, সেই অনুযায়ী মামলাটি বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। এদিন ১০ আসামিকে পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে হাবিবুর রহমান ওরফে ইসমাইল, মনিরুজ্জামান ওরফে মুন্না, নাসির উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা হয়। এই চারজনকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজির করার ঘটনায় ডিআইজি প্রিজনকে আগামী ৯ মার্চ উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।

আসামিদের জামিনের বিষয়ে সাবিনা আহমদ মলি বলেন, ১০ আসামির নথি হাইকোর্ট তলব করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার আসামি ফারুক হোসেন ছাড়া বাকি ৯ জনের নথি আদালতে আসেনি। তাই হাইকোর্ট ফারুক হোসেনের মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার জামিনের বিষয়টি বিচারিক আদালতকে বিবেচনা করতে বলেছেন। বাকিদের ৯ আসামির ব্যাপারে পরবর্তীতে শুনানি হবে।

সিলেট ও খুলনা বিভাগে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ১০ কারাবন্দির বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী সৈয়দা সাবিনা আহমেদ মলি। সেই বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের জামিন প্রশ্নে রুল জারির পাশাপাশি মামলার নথি তলব করেন।

এই ১০ জনের মধ্যে এক হত্যা মামলায় মৌলভীবাজারের ফারুক হোসেন ২০০৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। অপর এক হত্যা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিম মিয়া ২০০৫ সালে ২১ এপ্রিল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। ২০০৩ সালের ৩ মার্চ থেকে আরেকটি হত্যা মামলায় একই কারাগারে আছেন রাজু জগনাথ, ২০০৩ সালের ৪ জুলাই থেকে এক হত্যা মামলায় একই কারাগারে আছেন বশির উদ্দিন। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের এক মামলায় ২০০৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে হাবিবুর রহমান, ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে মনিরুজ্জামান মুন্না, ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নাসির উদ্দিন এবং ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে গিয়াসউদ্দিন সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে আছেন।

এ ছাড়া হত্যা মামলায় মো. হায়দার আলী ১৯৯৮ সালের ১০ মার্চ থেকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আছেন। আরেকটি হত্যা মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে মো. রফিকুল ইসলাম রাজা পিরোজপুর জেলা কারাগারে আছেন।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এস/এনআই/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৭)