শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে প্রতিবাদ করায় একজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ৬ মাসে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

মামলার বিবরণে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের হারুন বক্তারের স্ত্রী নিলা আক্তার পল্লী বিদ্যুতে চাকরি করার সুবাদে হারুন বক্তার, হান্নান বক্তার দক্ষিণ কেবলনগন গ্রামের প্রায় ১২০টি পরিবার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার, ১০ হাজার, ১৫ হাজার করে প্রতি ঘর থেকে টাকা নেন।

কিন্তু হাতেগোনা মাত্র কয়েকজনের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। টাকা নেওয়া সবার ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার কারণে এলাকায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের আলী হোসেন বক্তারসহ গ্রামের ১০-১২ জন লোক হারুন বক্তারের কাছে টাকা ফেরত চাইতে তাদের বাড়িতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর হারুন বক্তারের সাথে আলী হোসেন বক্তারের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হারুন বক্তার, কাসেম বক্তার, রিপন বক্তাসহ বেশ কয়েকজন মিলে আলী হোসেন বক্তারসহ অন্যান্য লোকজনের ওপর হামলা চালান।

এ সময় আলী হোসেন বক্তার, জয়নাল বক্তার, নিলয় বক্তার, মনির হোসেন বক্তার, মতিন বক্তার, সোহেল বক্তারসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। ঘটনার সময় হামলাকারীরা আলী হোসেনের বক্তারের মাথায় লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।

গুরুতর আহত আলী হোসেন বক্তারকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রিনা বেগম বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পালং মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কিন্তু খুনের ঘটনা ৬ মাস গেলেও মামলার কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ মামলার অভিযোগপত্র এখনো দাখিল করতে পারেনি।

এদিকে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। তবে পুলিশ বলছে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিহতের ভাতিজা জাহাঙ্গীর বক্তার বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গড়িমসি করছেন। মামলার চার্জশিটও দিচ্ছেন না।

মামলার বাদী রিনা আক্তার বলেন, আমার বাবাকে যারা খুন করেছে তারা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ। টাকাপয়সা খরচ করতে পারিনি বলে আমাদের মামলার কোনো আসামিকে ৬ মাসেও পুলিশ গ্রেফতার করেনি। পুলিশ ইচ্ছে করেই মামলার চার্জশিট দিচ্ছে না।

পালং মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. এমারৎ হোসেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলাটি তদন্ত প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের সাথে আলাপ-আলোচনার বিষয় রয়েছে। এখনো আসামিদের বিরুদ্ধে খুনের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া যায়নি।

(দ্য রিপোর্ট/কেএনইউ/এম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭)