দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : হিন্দু পরম্পরায় এই বিশ্বাস অটল যে, দেবাদিদেব শিবকে তুষ্ট করতে গেল তেমন কোনও ক্লেশ পেতে হয় না। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও সত্য যে, কোনও কারণে অসন্তুষ্ট হলে মহাদেবের রোষ এড়ানো খুবই কঠিন।

‘শিবপুরাণ’ অনুসারে ১২টি কুকর্ম শিবের ক্রোধ উৎপাদন করে। এই পাপগুলি থেকে দূরে থাকাই বাঞ্ছনীয়। ‘শিবপুরাণ’ জানাচ্ছে, এই পাপগুলি সর্বদা কৃতকর্ম না-ও হতে পারে। কুচিন্তাও এক প্রকার পাপ। সেই দিক থেকে বিচার করেই এই তালিকা নির্মাণ করেছে ‘শিবপুরাণ’।

১. কোনও পুরুষ যদি পরনারী গমনের চিন্তা করেন অথবা কোনও নারী যদি পরপুরুষে আসক্ত হন, তবে তা ঘোরতর পাপ হিসেবে গণ্য হয়।

২. অন্যের সম্পত্তি আত্মসাতের চিন্তাও মহাপাপ।

৩. নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তারকে আশাহত করা ইত্যাদিও ক্ষমাহীন অপরাধ।

৪. স্বেচ্ছায় কেউ সৎপথ ছেড়ে যদি জীবনধারণের জন্য অসদুপায় অবলম্বন করে, শিব তাকে ক্ষমা করেন না।

৫. গর্ভবতী অথবা ঋতুমতী নারীকে কুকথা বলা মহাপাপ, জানাচ্ছে ‘শিবপুরাণ’।

৬. অন্যের সুনাম ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া অক্ষম্য অপরাধ।

৭. অকারণে গুজব রটানো, কারোর ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে তার অনুপস্থিতিতে নিন্দাকে পাপ হিসেবে চিহ্নিত করে ‘শিবপুরাণ’।

৮. কুখাদ্য ভক্ষণ রাতিমতো গর্হিত কর্ম বলে বিবেচিত।

৯. নারী, শিশু ও অবলা জীবদের প্রতি নিষ্ঠুরতা অক্ষম্য। গোয়ালে অগ্নিসংযোগ, কোনও নগরকে আক্রমণও ক্ষমাহীন। পুত্রবধূ অথবা শ্যলিকার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনও একই ভাবে ঘোর পাপ।

১০. ব্রাহ্মণ ও মন্দিরের সম্পত্তিহরণকে পাপ বলে জানায় ‘শিবপুরাণ’।

১১. গুরু অথবা শিক্ষক, সন্ন্যাসী, বাবা-মা প্রমুখের প্রতি অসম্মান প্রদর্শনকে শিব ক্ষমা করেন না।

১২. অকারণে মদ্যপান, গুরুপত্নীগমন ইত্যাদিকেও চরম পাপ বলে মনে করে ‘শিবপুরাণ’।

মনে রাখা দরকার ‘শিব’ কোনও এক দেবতামাত্র নন। তিনি অনাদি অনন্ত পরমের কল্পনা। এই দ্বাদশ পাপ আসলে স্থিতির বিপক্ষেই নিয়ে যায় মানুষকে। স্থিতি বিপন্ন হলে প্র্লয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে, শিব প্রলয়েরই দেবতা। এই পাপগুলি যদি পৃথিবীকে ভারাক্রান্ত করে ফেলে, তিনি তার ডমরু তুলে নেন। শুরু হয় শিবতাণ্ডব।

(দ্য রিপোর্ট/এফএস/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭)