কোচিং ব্যবসায়ীর কাছে পুলিশ পরিদর্শকের ৭০ লাখ টাকা দাবি!
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে এক কোচিং ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে জোরপূর্বক স্ট্যাম্প ও অলিখিত চেকে স্বাক্ষর আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের চকবাজার থানার সাবেক ওসি ও বর্তমান নগর বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ পরিদর্শক আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন রাশেদ মিয়া নামের ওই কোচিং ব্যবসায়ী। এ সময় তিনি পুলিশ পরিদর্শক আজিজ আহমেদের হয়রানি থেকে রক্ষার জন্য ঊর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাশেদ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি এমসিএইচ ও ইউনি এইড কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন তিনি। ইনফরমেশন টেকনোলজিতে (আইটি) অভিজ্ঞতার সুবাদে গত কয়েক বছর আগে চকবাজার থানার সাবেক ওসি আজিজ আহমেদের সাথে তার পরিচয় হয়। ওসি আজিজের ব্যক্তিগত সকল আইটির কাজ তাকে দিয়ে করাতেন। আজিজ নিয়মিত তার প্রতিষ্ঠান এমসিএইচ ও ইউনি এইড কোচিং সেন্টারে যাতায়াত করতেন। একপর্যায়ে কোচিং সেন্টারের ওপর ওসি আজিজের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। বিভিন্ন সময় রাশেদের কাছে তিনি টাকা দাবি করতেন এবং চাপ দিতেন। বিভিন্ন দফায় আজিজকে প্রায় আট লাখ টাকা ধার দিয়েছেন রাশেদ। পরে ওই টাকা ফেরত চাইলে তিনি রাশেদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন।
গত বছরের আগস্ট মাসে আজিজ আহমেদ থানায় আসামির সাথে বৈঠক করার অপরাধে স্ট্যান্ডরিলিজ হন ও পরবর্তীতে সিটি এসবিতে যোগ দেন। এরপরই আজিজ আহমেদ রাশেদের কাছে তার চাকরির (আজিজের) সুবিধাজনক স্থানে পদায়নের জন্য ৭০ লাখ টাকা দাবি করেন।
টাকা দিতে অপারগ হলে তিনি বিভিন্নভাবে রাশেদকে হুমকি প্রদান করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আজিজ আহমেদ তার সহযোগী আবুল মনসুর আজাদ নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে রাশেদের কোচিংয়ে আসেন এবং তার কাছ থেকে পুনরায় ৭০ লাখ টাকা দাবি করেন। রাশেদ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা দুইজন মিলে জোর করে সাদা কাগজে তার স্বাক্ষর নেন এবং রাশেদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান।
পরবর্তীতে ১৬ অক্টোবর আজিজ আহমেদ ও আবুল মনছুর আজাদ পুনরায় কোচিং সেন্টারে আসেন এবং ৭০ লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি রাশেদকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখান ও দুইটি তালা প্রদর্শনপূর্বক কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
একপর্যায়ে আজিজ আহমেদ ড্রয়ারের চাবি ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে রক্ষিত ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের হিসাব নং ১৩৩.১০১.৯০৩০ এর মোট ৯টি চেকের পাতা (চেক নং ২৫৫৭৫৮২ থেকে ২৫৫৭৫৯০) ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের হিসাব নং ১১০৪১০৩১০৮১৯৩০০১ এর চেকবইয়ের দুইটি পাতাসহ (চেক নং ৪০৫৭৫৬১ ও ৪০৫৭৫৬২) সর্বমোট ১১টি চেক নিয়ে নেন।
এ ব্যাপারে গত বছর ১৪ ডিসেম্বর সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন রাশেদ মিয়া।
এ ব্যাপারে সিটিএসবির পরিদর্শক আজিজ আহমেদের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, ‘আামি আপনারদের অফিসে এসে কথা বলব। সকল ডকুমেন্ট আপনাদের দেখাব।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জেডটি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭)