চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী ও আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি। শিগগিরই তাকে চট্টগ্রামে ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. কামারুজ্জামান।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সদর দফতরে নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান তদন্ত কর্মকর্তা। 

মো. কামারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাবুল আক্তার সম্পর্কে সম্প্রতি মিতুর মা-বাবা এবং ছোট বোন যে বক্তব্য আমাদের কাছে দিয়েছে তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমরা আবারও বাবুল আক্তারের মুখোমুখি হবো এবং এসব কথা কতটুক সত্য তা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে। শিগগিরই আমরা বাবুলকে আবার চট্টগ্রামে ডাকবো।

তবে কখন বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রামে ডাকা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলেননি তদন্ত কর্মকর্তা কামারুজ্জামান।

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তার সিএমপিতে এসে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। স্ত্রী খুনের মামলার বাদি হিসেবে ওইদিন বাবুল আক্তার সিএমপিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।

এরপর ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামে এসে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দেন মিতুর বাবা প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন এবং মিতুর মা শাহেদা বেগম।

এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা কামারুজ্জামান রাজধানীর রামপুরার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফের বাসায় গেলে সেখানে মিতুর মা সাহেদা মোশাররফ বলেন, মিতু খুনের ৫-৭ দিন আগে থেকে তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের আচরণে দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়েছিল। এতে বাবুলকে নিয়ে স্ত্রী মিতুর মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছিল। মিতু বিষয়টি তার মাকে জানিয়েছিলেন। মিতু আমাকে বলছিল যে, মা আমার সন্দেহ লাগছে, হঠাৎ করে বাবুলের আচরণ পরিবর্তন হয়ে গেল কেন।তার মোটিভটা ভাল লাগছে না।

মিতুর বোন নিনজা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন, বাবুল আক্তারের বোন লাবণী মিতুকে জানিয়েছিল যে, ‘বাবলু আক্তার বর্ণিকে বিয়ে করবে। এতে তার (মিতুর) কোনো আপত্তি আছে কিনা। মিতু একথা শোনার পর ফোনে তার মা ও বোনের সাথে খুব কান্নাকাটি করেছিলো। যা মিতুর মা পরে তাকে (নিনজাকে) বলেছে। মিতুর মা তখন মিতুকে বাবুল আক্তারের বোনের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন।’

এদিকে এসব কথা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে বাবুল আক্তার এ নিয়ে মুখ খুলেন। সোমবার তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে শ্বশুর-শাশুড়িসহ ওই পরিবারের সাথে তার বিরোধ নিয়ে নাতিদীর্ঘ বক্তব্যে বিভিন্ন অজানা তথ্য তুলে ধরেন। তার এ বক্তব্যে সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন সদর দফতরে কর্মরত তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ‍মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭)