চট্টগ্রাম অফিস : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই আইন নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থি। এই আইনের মাধ্যমে আমাদেরকে দাসত্ব এবং একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে সরকার। এই আইন সংবিধানের সঙ্গে যেভাবে সাংঘর্ষিক, ঠিক সেভাবে নীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এই আইনকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে সব ধরনের আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬, ‘নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বার কাউন্সিলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যানি এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. ফারহাদ হালিম ডোনার।

নগরীর নাছিরাবাদস্থ একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে আমীর খসরু বলেন, ‘সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই নাগরিকত্ব আইন করেছে। এই আইনের মাধ্যমে সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। যাতে দেশের প্রতিপক্ষ কেউ না থাকে। সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনে দেশে এখন প্রতিবাদ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারের মন্ত্রী এমপিরা দেশের বাইরে গেলেই তাদেরকে প্রতিহত করছে প্রবাসীরা।’

সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার কোন আইন তৈরি করার ক্ষমতা রাখে না। কারণ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় ফলে এই সংসদ সদস্য কোন আইন পাশ করতে পারে না।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পুরানো ধ্যান ধারণার ভিত্তিতে এই কর্তৃত্ববাদী সরকার এই আইন তৈরি করেছে। সরকার এই ধরনের বিভিন্ন আইন করে সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬, করে এখন নাগরিকদের ধ্বংস করতে চায়। এই আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রস্তাবিত নাগরিক আইন এর তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক শওকত মাহমুদ বলেন, এর মাধ্যমে ভিন্ন মতালম্বীদের নাগরিকত্ব চ্যুত্ব করতেই এই প্রস্তাব। বাংলাদেশের জালেম সরকারের পতনের মাধ্যমে সকল ধরনের ফ্যাসিবাদের অবসান হবে। স্বৈরাচারীনীর পতনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ তাদের ফিরিয়ে আনবে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিনা ভোটে বিকাশ সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে কোন কালো আইন এ দেশের জনগণ মানবে না। বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬, একটি কালো আইন। এই আইনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার হরণ করা হবে। দেশের নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে চাইলে নির্বাচনকালীন একটি সহায়ক সরকার গঠন করতে হবে।

বক্তব্য রাখেন-চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ছালেহ প্রিন্স, মাহবুবুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়ছার কামাল।

আলোচক হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আল মুজাদ্দী, বুয়েট প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সাব্বির মোস্তফা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মঈনুল আহসান খান, ঢাকা বারের সভাপতি এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, এ্যাডভোকেট কবির চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য শামশুল আলম, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, প্রফেসর সিদ্দিক আহাম্মদ, ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশন এর সভাপতি আবু সুফিয়ান, এ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, এ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার, ডা. খুরশিদ জামিল, প্রফেসর নছুরুল কাদেরী, সাংবাদিক জাহেদুল করিম কচি প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/মার্চ ০৪, ২০১৭)