দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মভূষণ’ অর্জন করায় তাকে শনিবার সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এ দিন দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও-এর পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ড. আনিসুজ্জামানের এ অর্জন শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্যই গৌরবের নয়, এটি সমগ্র এশিয়া মহাদেশের মানুষের জন্য গৌরবের।

ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাস্তবে আমার জীবনে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আমার কাজ যা নয়, তাও আমি করেছি। আমার কোনো অতৃপ্তি নেই। আমি যা পেয়েছি তাতেই আমি খুশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, কোনো কিছুতে যেন আমার মাঝে অহঙ্কার না হয়।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান কে এম শফি উল্যাহ, টিআইবির চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ও নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখায়রুজ্জামান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদিন মালিক, সাংবাদিক আবেদ খান, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, সংগীত শিল্পী বুলবুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মফিদুল হক, অধ্যাপক অজয় রায়, জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাংবাদিক হারুন হাবিব, সেলিম চৌধুরী, ড. সারোয়ার আলী প্রমুখ।

গেল ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এ উপাধি ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। শিক্ষা ও সাহিত্যে পদ্মভূষণ পেয়েছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। পদ্মভূষণ ভারতের তৃতীয় বেসামরিক সর্বোচ্চ সম্মাননা।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক। ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৬২ সালে তিনি পিএইচডি করেন। তার পিএইচডির অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল ‘ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৭৫৭-১৯১৮)’। ১৯৬৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলো হিসেবে বৃত্তি পান। ১৯৬৯ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। তরুণ বয়সে তিনি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। এ ছাড়া শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত গণআদালতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান দেশে-বিদেশে এর আগেও বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে আছে, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, আনন্দ পুরস্কার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি. লিট ইত্যাদি। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের গবেষণা, মৌলিক প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা ও সম্পাদিত বহু গ্রন্থ রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)