মীরসরাইয়ের ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে বিপুল গ্রেনেড অস্ত্র উদ্ধার
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গ্রেনেড, কার্বণ স্টিল, চাপাতি ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর মেশিনসহ জঙ্গিদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।
মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উপজেলা সদরের কলেজ রোডের রেদওয়ান মঞ্জিল নামের দোতলা বাড়ির নীচ কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।
উদ্ধার অভিযান শেষে বাড়ির ওই দুটি কক্ষ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
উদ্ধার করা অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ২৩টি হ্যান্ড গ্রেনেড, বোমা তৈরির ৪০টি উপকরণ, ১১ কেজি বিস্ফোরক, ৯টি চাপাতি, বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর মেশিন (IED), ২৮০ বক্স কার্বণ স্টিল (বেয়ারিং বল) (প্রতি প্যাকেটে ১০০ করে), জঙ্গি পোষাক (৭টি কালো বড় রুমাল ও ৭টি কালো পাঞ্জাবী) আরবীতে লেখা একটি ব্যানারসহ আরো অন্যান্য উপকরণ।
পুলিশ জানায়, চলতি বছরের১ ফেব্রুয়ারি জঙ্গিরা নিজেদের কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে মীরসরাইয়ের উক্ত বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। এর পর থেকে তারা সেখানে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলে সবার অগোচরে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার তীরচর গ্রাম এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের একটি চেকপোস্টে বাস থামিয়ে চালকের কাগজ পরীক্ষা করার সময় বাস থেকে দুই ‘জঙ্গি’ নেমে এসে আল্লাহু আকবর বলে দুটি বোমা ছোড়ে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। পরে জসিম ও হাছান নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। তারা জেএমবির সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে রাতেই পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্য এবং কুমিল্লা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। তারা রাত ১১টা থেকে মীরসরাইয়ের উক্ত বাড়ি ঘিরে রাখে। এবং ভোরে অভিযান শুরু করে। অভিযান চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
বুধবার সকালে বাড়ি পাহারায় নিয়োজিত মিরসরাই থানার এসআই মো. ইকবাল বলেন, ‘রাতে পুলিশের স্পেশাল দুটি টিম কুমিল্লায় আটক হওয়া এক জঙ্গিকে নিয়ে রিদোয়ান মঞ্জিলে অভিযান চালায়। ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।’
কুমিল্লার একটি চেকপোস্টে পুলিশের ওপর দুই ‘জঙ্গি’র হামলার পর মঙ্গলবার রাত থেকে এ অভিযান চালানো হয়। বুধবার দুপুরে মীরসরাইয়ে এ অভিযান শেষ করে জঙ্গি দলের এক সদস্যকে নিয়ে অভিযান চালানো দলটি চট্টগ্রামের পটিয়া শান্তিরহাটে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে এ অভিযানে কেউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমকে/মার্চ ০৮, ২০১৭)