দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বর্তমান সরকার যদি শিগগিরই সর্বদলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না আসে তবে দেশ বিলীন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নতুন বইয়ের প্রকাশ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী সরকার। এরা সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির সৃষ্টি করছে।

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি। দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে অথচ প্রশাসন বা সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারকে জবাব দিতে হবে। কারণ এটাই গণতন্ত্র। এর জন্যই আমরা যুদ্ধ করেছি।

ইসলাম শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম কখনও কোনো মানুষকে হত্যায় প্রশ্রয় দেয়নি। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে ইসলামের কোথাও কোনো শব্দ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য হতে হলে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। কিন্তু বর্তমান ১৫৩ জন সাংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আমাদের সকলের ঐক্য বদ্ধ হতে হবে। অবিলম্বে এ সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের রাজপথে নামতে হবে।

সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, দেশে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চলছে। মিডিয়া স্বাধীনতা হরণ করেছে এ সরকার। কিন্তু গণমাধ্যমগুলোর এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।

লেখক ও গবেষক ফরহাদ মাজহার বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। কিন্তু বিরোধীদের দমন করার লক্ষে আজ আইন করা হচ্ছে। এখান থেকে কীভাবে আইনের সুবিধা পাবেন? ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিএনপির ব্যর্থতার প্রধান কারণ তাদের দলের মধ্য কাকে সাম্প্রদায়িকতা বলে এবং তা কী- এ সব বিষয়ে তারা কেউ পরিষ্কার না। আমাদের মাঝে অস্পষ্টতা মারাত্মক ক্ষতি।

বিএনপিতে রাজনৈতিক মতাদর্শের সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মতাদর্শ ঐক্য হওয়া দরকার। সেটা জামায়াত, হেফাজত যেটাই হোক না কেন সবাইকে নিয়ে মতাদর্শ ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নিজেদের মধ্য সমন্বয় করে খালেদা জিয়াকে শক্তিশালী করে আন্দোলন করতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে কোনো সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন বলেন, আমরা জানি না মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত করার জন্য কার কাছে আবেদন করব। আর আবেদন করা ঠিক হবে কিনা তাও জানি না। তবে জনগণ একদিন জেগে ওঠবে। সে দিন হয়ত জেলের তালা ভেঙে তাকে মুক্ত করবে জনগণ।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মহসিন আলী, ঢাবি অধ্যাপক আকতার হোসেন প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/জেএম/সা/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)