চট্টগ্রাম অফিস : চীনের তৈরি দুটি সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ যুক্ত করার মধ্য দিয়ে ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (১২ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জয়যাত্রা’ ও ‘নবযাত্রা’ নামের সাবমেরিন দুটির কমিশনিং ফরমান অধিনায়কদের হাতে তুলে দেন।

সাবমেরিনের দুটির কমিশন প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সংকটময় মুহূর্তে সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ ‘জয়যাত্রা’ ও ‘নবযাত্রা’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নৌ বাহিনীতে সংযুক্ত হওয়ার দুটি সাবমেরিন দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব সক্ষমতা যোগ করবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌ বহিনী সত্যিকারের ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হলো। এটি বর্তমান সরকারের একটি স্বপ্ন এবং প্রতিশ্রুতি ছিল।’

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে দেশের স্বার্বভৌমত্ব সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন।

প্রধামনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শক্তিশালী সারফেস ফ্লিটের পাশাপাশি নেভাল এভিয়েশন এবং সাবমেরিন আর্ম যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।’

প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে সাবমেরিন দুটির অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দিয়ে নৌবাহিনীর রীতি অনুয়ায়ী নামফলক উম্মোচন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সাবমেরিনের জন্য নির্মিত বিভিন্ন বেজ সাপোর্ট ফেসিলিটিজ এর উদ্বোধন করেন। সাবমেরিনের জন্য বিএনএস ‘শেখ হাসিনা’ নামে একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নৌ ঘাঁটিতে এসে পৌঁছালে নৌ বাহিনীর প্রধান রিয়াল এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়াল এডমিরাল এম আবু আশরাফ তাঁকে স্বাগত জানান।

প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকায় চীন থেকে ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে সাবমেরিন দুটি কিনেছে বাংলাদেশ। গত বছর ১৪ নভেম্বর চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শিপইয়ার্ডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চীন সরকারের পক্ষে রিয়ার অ্যাডমিরাল লিউ জিঝু বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে সাবমেরিন দুটি হস্তান্তর করেন। এ সময় দুই দেশের নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ২৩ জানুয়ারি এ দুটি সাবমেরিন পৌঁছায় চট্টগ্রামে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানায়, এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দুটি ডিজেল ইলেকট্রিক চালিত, যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার এবং প্রস্থ ৭ দশমিক ৬ মিটার। সাবমেরিনগুলো টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সুসজ্জিত, যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ চালাতে সক্ষম।

(দ্য রিপোর্ট/এস/এমকে/মার্চ ১২, ২০১৭)