দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চেহারায় রং মেখে সকাল থেকেই রাজধানী জুড়ে ঘুরছেন তরুণ-তরুণীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এমন দৃশ্য দেখা গেল। রঙে রঙে ছেয়ে গেছে যেন চারপাশ। রঙের এমন ছড়াছড়ি দেখার পর কাউকে আর বলে দিতে হয় না আজ (রবিবার) দোল উৎসব।

শহর জুড়ে এমন রঙের খেলায় কেউ কেউ হয়তো আনমনে গেয়ে চলেছেন রবি ঠাকুরের গান ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও, যাও, যাও গো এবার যাবার আগে/ তোমার আপন রাগে, তোমার গোপন রাগে, তোমার তরুণ হাসির অরুণ রাগে/ অশ্রুজলের করুণ রাগে/ রঙ যেন মোর মর্মে লাগে, আমার সকল কর্মে লাগে...’

নগরের মানুষ দোল উৎসবে মেতে উঠলেও অনেকেই জানেন না এই উৎসবের মাহাত্ম্য। অসুর বিনাশের প্রতীক হিসেবে দিনটিকে উদযাপন করা হয়। সনাতন ধর্মমতে, তৎসম শব্দ ‘হোরি’র অপভ্রংশ হোলি। সেখান থেকে হোলক, হোলিকা, যার অর্থ ডাইনি। স্কন্দপূরাণের ফাল্গুন মাহাত্ম্য অংশের হোলিকা বধ কাহিনী থেকেই এ উৎসবের উৎপত্তি বলে পণ্ডিতদের ভাষ্য।

বৈষ্ণব বিশ্বাসীদের কেউ কেউ একে গৌর-পূর্ণিমা নামেও অভিহিত করেন। ফাল্গুনী পূর্ণিমার এ তিথিতে ‘কলিযুগের অবতার’ গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্মতিথি থাকায় আনন্দের পাশাপাশি ধর্মীয় আচারও পালন করেন তারা।

বাউল-ফকিরেরা দিনটিকে দোল পূর্ণিমা হিসেবে উৎযাপন করেন। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় ফকির লালন সাঁইয়ের ভক্তরা দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এ ছাড়াও সারাদেশে দোল উৎসবে রঙের খেলায় মেতেছে।

দোল উৎসব উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। মন্দিরের নিত্য পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী ধর্মমত নির্বিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেন।

দোল উৎসবে সবারই চাওয়া সুন্দর হোক, মঙ্গলময় হোক সবার জীবন। জয় হোক মানুষের।

(দ্য রিপোর্ট/পিএস/জেডটি/এনআই/মার্চ ১২, ২০১৭)