চট্টগ্রামে ৫ মাদ্রাসাছাত্র নিখোঁজ, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে একের পর এক মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। দিনের পর দিন পার হলেও হদিস মিলছে না নিখোঁজ ছাত্রদের। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সম্প্রতি ৫ জন মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় অভিভাবক মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
এসব ছাত্র পুলিশি খাতায় নিখোঁজ থাকলেও এরা কি স্বেচ্ছায় পলাতক নাকি তাদের কেউ ধরে নিয়ে গেছে তা স্পষ্ট নয়। প্রশাসন থেকেও এর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা যায়নি।
বুধবার (৮ মার্চ) বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দনগর দারুল কোরআন হেফজখানা থেকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার সিপাই পাড়ার মো. ছাবেরের ছেলে মো. সাজ্জাদ (৯), ঘোটি ভাংগা এলাকার শামসুল আলমের ছেলে মো. ইমরান (১০) ও মগকাটা এলাকার আবদুল শুক্কুরের ছেলে মো. ফয়সাল (১০) একসাথে নিখোঁজ হয়।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বোয়ালখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন হেফজখানার শিক্ষক মো. কাউছার।
তিনি জানান, গত দুই বছর ধরে এ হেফজখানায় তারা পড়াশুনা করে আসছে। হঠাৎ করে বুধবার ৩ ছাত্র পালিয়ে যায়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, এক ছাত্র ৩ মাস আগে পালানোর চেষ্টা করলে তার অভিভাবকরা মহেশখালী থেকে এসে তাকে পায়ে বেড়ি পরিয়ে যায়, যাতে পালাতে না পারে। পরে স্বাভাবিক হলে তার বেড়ি খুলে নেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সে আরও ২ জনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। আমরা মহেশখালী তার গ্রামের বাড়িতে খোঁজ-খবর নিয়েছি। সেখানেও সে যায়নি। আমাদের অনুসন্ধান চলছে। মনে হচ্ছে হেফজখানার কড়া শাসনের কারণে তারা নিজেরাই পালিয়ে আছে।
এ ব্যাপারে হেফজখানার পক্ষ থেকে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে উল্লেখ্য করে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতো ছোট শিশু জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে চলে যেতে পারে এটা আমর বিশ্বাস হয় না।’
এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল ছলিমপুর ১০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল আমিনের ছেলে এনামুল হক (১৩) নিখোঁজ হয়। গত ১২ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে এনামুল হক।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাতে তার বড় ভাই বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, এনামুল হক মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। সে চট্টগ্রামের বায়েজিদ তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।
তারবড় ভাই আব্দুল্লাহ ইসলাম জানান,২৭ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসা যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়েছিল এনামুল। এরপর থেকে তার কোন খবর পাচ্ছি না। তার নিখোঁজের পর থেকে বাবা-মা পাগলের মত হয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশের কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না।
এছাড়া পটিয়া উপজেলার এস আলম মাদ্রাসা হেফজখানায় অধ্যয়নরত মো. ওবাইদুল হাসান (১৪) ২৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়। এখনো তার খোঁজ মেলেনি। এ ব্যাপারে পটিয়া থানায় ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান পটিয়া পুলিশ।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/এনআই/মার্চ ১২, ২০১৭)