কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ধর্ম-বর্ণ ও জাত-পাত ভুলে দেশ-বিদেশের হাজারো লালনভক্ত অনুসারী আর দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট কুষ্টিয়ার লালন আখড়াবাড়ী ফাঁকা হতে শুরু করেছে।

 

শনিবার (১১ মার্চ) শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে সোমবার রাতে।

 

সোমবার (১৩ মার্চ) রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ আসকারীর আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।

দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়ীতে চলা তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শেষ হচ্ছে সোমবার রাতে। ‘আর কি হবে এমন জনম’-এই স্লোগানে ও গানের সুর ধরে তৃষ্ণার্ত মন নিয়ে আত্মার সম্মিলন-সম্পর্ক ছিন্ন করে চোখের জলে ভক্ত অনুসারীরা ভবের হাট লালন আখড়াবাড়ী ছেড়ে যাচ্ছেন।

সোমবার সকাল থেকেই এই উৎসব ছেড়ে সাধু-গুরুরা যে যার বাড়ি ফিরছেন। ভবের হাট ছেড়ে যাওয়ার সময় মূল মাজারে চিরনিদ্রায় শায়িত লালন ফকিরের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন শেষে গুরু-শিষ্যরা ব্যথিত হৃদয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আপন ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন লালনের অহিংস মানবতার বাণী।

শেষ দিনে মাজারের বাইরের মাঠে চলা লালন মেলা এখনো জমজমাট রয়েছে। গভীর রাতে শেষ হবে সাধু সঙ্গের এই মিলন মেলা।

উল্লেখ্য, শিষ্য আর অনুসারীদের খাঁটি করে গড়ে তুলতে ফকির লালন জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়ীতে প্রতিবছর চৈত্রের দোল পূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে সাধু সঙ্গ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছে তার অনুসারীরা। এবারও শনিবার (১১ মার্চ) থেকে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় লালন একাডেমি লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করে। উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে আসা হাজারো লালন অনুসারী, ভক্ত অনুরাগী আর দর্শনার্থী আখড়াবাড়ীতে অবস্থান নিয়েছিলেন।

নিরাপত্তা ও অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে শেষ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কয়েক স্তরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করেন।

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এম/মার্চ ১৩, ২০১৭)