দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গত সপ্তাহ থেকে উর্ধ্বমুখী ডিমের দাম কমেনি। বেড়েছে গুঁড়োদুধ ও আদার দামও। তবে কমেছে মসুর ডালের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে পিঁয়াজের দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ঘুরে শনিবার নিত্যপণ্যের দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত সপ্তাহ শুরুর আগের দিন প্রতিহালি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ছিল ২৮ টাকা। গত সপ্তাহ থেকে তা বেড়ে যায়। সেই দাম বাড়তি চলতি সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে সেই ডিমের দাম প্রতিহালি ৩০ টাকা। এ ছাড়া হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৪০ টাকায়।

ডিমের বাড়তি দাম প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, বর্তমানে ডিমের উৎপাদন কম। সেই সঙ্গে চাহিদাও বেশি। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন ব্রান্ডের গুঁড়োদুধের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের মাসুদ জেনারেল স্টোরের খোরশেদ আলম জানান, আগে হাফ কেজি ডিপ্লোমা গুঁড়োদুধের দাম ছিল ৩২৫ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৩৩৫ টাকা। মার্কস ও ফ্রেস ব্রান্ডের গুঁড়োদুধের দাম ছিল ২৮০ টাকা বর্তমানে তার দাম বেড়ে হয়েছে ২৯০ টাকা।

এদিকে আমদানি করা আদার দাম লাফ দিয়ে ৪০ টাকা বেড়ে গেছে। ১১৫ টাকা কেজি আদার দাম বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। তবে কেজিতে দেশি দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বর্তমানে দেশী আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

আদার দাম নিয়ে কারওয়ান বাজারের আদা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পাইকাররা বলছেন, আদার আমদানি কম। তাই দাম বেশি।

সবজির মধ্যে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা করলা। প্রতিকেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। করলার দাম প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মুরাদ হোসেন বলেন, নতুন সবজি বলে এর আমদানি কম। তাই দাম বেশি।

এদিকে কাঁচামরিচ কারওয়ান বাজারের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে। কারওয়ান বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, কিন্তু একই মরিচ সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা প্রতিকেজি।

অন্য সবজির মধ্যে টমেটো মানভেদে ২০-৩০ টাকায়, বেগুন ৩৫-৪০ টাকায়, শিম বাজার ও মানভেদে ১৫-৩০ টাকায়, গাজর ১৫-২০ টাকায়, ফুলকপি প্রতি পিছ ২৫ টাকায়, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, আলু ১০-১৫ টাকায়, মটরশুটি ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রতিপিছ ফুল কপি ২০ টাকায়, টমেটো ৩০ টাকায়, আলু ১২-১৫ টাকায়, শিম প্রকারভেদে ২৫-৩০ টাকায়, শসা ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।

স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজের বাজার। বাজারে ভারতীয় ও দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। প্রতিকেজি ভারতীয় রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।

গত কয়েক মাস ধরে অব্যাহত বাড়তি মূল্যে বিক্রি হওয়া চালের দাম কমেনি। মিনিকেট চালের দাম আরও ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৪৮ টাকায়, নাজিরশাইল প্রতিকেজি ৪৫-৫৫ টাকায়, ব্রি ২৮ প্রতি কেজি ৪৩-৪৪ টাকায়, স্বর্ণা (মোটা) প্রতি কেজি ৩৩-৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইস এজেন্সির চাল ব্যবসায়ী আল হাবিব জানালেন, বর্তমান চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মিনিকেট চালের মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে দাম বেড়েছে। তবে আতপ চালের দাম কমেছে বলেও জানান তিনি।

মাংসের মধ্যে বাড়েনি গরু ও খাঁসির মাংসের দাম। তবে মুরগি ও মাছের দামে গত কয়েক সপ্তাহে যে চড়াভাব লক্ষ করা গেছে তা অব্যাহত রয়েছে। বাজারভেদে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়। দেশী সোনালী জাতের মুরগি আকারভেদে প্রতিপিছ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৭০ টাকায়। গরুর মাংস প্রতিকেজি ২৮০ টাকায় ও খাঁসির মাংস প্রতিকেজি ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী জানালেন, মাছের দাম বেশ চড়া। বাজার ঘুরে তার কথার প্রমাণ মিলল। বাজারের একটি বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকায়। এছাড়া মাঝারি মানের রুই প্রতিকেজি ২৮০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্য পণ্যের মধ্যে কমেছে মসুর ডালের দাম। বর্তমানে ভারতীয় ডাল প্রতিকেজি ৬৫-৭০ টাকায় ও দেশী ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএস/জেএম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)