‘বাংলার রেনেসাঁস-অধ্যয়নে কৃষ্ণমোহন এক অনিবার্য চরিত্র’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার কাল উভয়ই আমাদের ইতিহাস-পাঠে গুরুত্বপূর্ণ। উনিশ শতকের বাংলা রেনেসাঁস-অধ্যয়নে কৃষ্ণমোহন এক অনিবার্য চরিত্র। তাঁকে বিচারের ক্ষেত্রে কেবল ভক্তিমূলক বিবেচনা নয়, একই সঙ্গে দ্বান্দ্বিক পর্যালোচনাও অত্যন্ত জরুরি। কারণ তৎকালের উপনিবেশায়িত রাষ্ট্রে জ্ঞানকাণ্ডও উপনিবেশ-প্রক্রিয়ার বাইরে ছিল না।
শনিবার বিকেলে মেলামঞ্চে অনুষ্ঠিত রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে দুটো পৃথকপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা এবং পার্থ সেনগুপ্ত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অনিরুদ্ধ কাহালি, দিব্যদ্যুতি সরকার এবং মোহাম্মদ আজম। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান কৃষ্ণমোহন আপন মেধায় সমকালীন সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সমাজ-সংস্কারে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কর্মক্ষেত্রে তিনি ছিলেন একাধারে- শিক্ষক, যাজক, সাংবাদিক, গ্রন্থ-অনুবাদক ও রচয়িতা, সমাজ-সংগঠক, রাজনৈতিক চিন্তক ও দেশপ্রেমিক। অখণ্ড ভারতে তিনিই প্রথম বিশ্বকোষ-প্রণেতা। সেকালের সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাঁর প্রণীত বিদ্যাকল্পদ্রুম কোষগ্রন্থের বিস্তৃত পরিসর, বিষয় বৈচিত্র্য ও আপন গুণে ভারতীয় ভাষাসমূহের মধ্যে প্রথম বিশ্বকোষ-এর মর্যাদা অর্জন করেছে। দুষ্প্রাপ্য এই কোষগ্রন্থ তাই আজও বিস্ময় জাগায়। বিদ্যাকল্পদ্রুম প্রণয়নে প্রাচ্য-প্রতীচ্যের মিলনের প্রয়াস সার্থক হয়েছে ডিরোজিও ভাবনায় উজ্জীবিত রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের একক পরিশ্রম ও সাধনায়।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, বিশ্বকোষ প্রণয়ন ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এক স্মরণীয় নাম। বাংলা একাডেমি জন্ম দ্বি-শতবর্ষে তাঁকে স্মরণ করে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে উনিশ শতক পুনর্পাঠের সুযোগ করে দিয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)