পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো হাতব্যাগ?
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : লন্ডনের কোর্টাল্ড গ্যালারিতে শৌখিন আসবাবের প্রদর্শনীতে ১৪ শতকের একটি হাতব্যাগ দেখানো হচ্ছে। উত্তর ইরাক থেকে পাওয়া নারীদের ব্যবহারের এই হাতব্যাগকে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো হাতব্যাগ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সোনা ও রূপা খচিত পিতলে নির্মিত এ ধরনের কেবল একটি ব্যাগেরই হদিস মিলেছে। তাই এটি যে আসলে কি বস্তু তাও বুঝে উঠতে পারছিলেন না বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমে এটিকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের বাক্স বলে মনে করা হয়েছিল, আবার এটাকে দলিলপত্র রাখার কাজে ব্যবহার করা হতো বলেও ধরে নেওয়া হয়েছিল, এমনকি মনে করা হয়েছিল এটি ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হওয়ার সময় ব্যবহার করা হয়। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এটি যে মূলত নারীদের হাতব্যাগ তাই ধরতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এখন পরিষ্কার যে এটি আসলে চতুর্দশ শতকে ইরাকের মসুলে তৈরি হওয়া নারীদের ব্যবহারের হাতব্যাগ।
ব্যাগটির কারুকার্যে ইসলামী ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু ধাতুর শ্রমিকরা যে মঙ্গল বংশের নতুন শাসক গোষ্ঠীদের দিয়ে প্রভাবিত হতে শুরু করেছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় ব্যাগটিতে খচিত একটি দরবারের চিত্র থেকে।
কিছুটা ক্ষয় হয়ে যাওয়া এই চিত্রে দেখা যায় মঙ্গোলীয় পোশাক ও পালকের টুপি পড়া দুই নারী-পুরুষ মূল বেদিতে বসে আছেন। আর তাদের ঘিরে রয়েছেন সভাসদ ও পরিচারকের দল। বাম দিকে কিছুটা দূরে বসা একজন বাজপাখিপালক। ডান দিকে দূরে বসে রয়েছেন এক সংজ্ঞীতজ্ঞ। একজন ছাতা বহনকারীর অবস্থানও রয়েছে ডান দিকে।
এমনকি হাতব্যাগটি বহনের একটি চিত্রও আঁকা রয়েছে এর ওপরে। যেখানে দেখা যাচ্ছে এক হাতে হাতব্যাগ আর অন্য হাতে ধরা রয়েছে আয়না আর রুমাল।
এই চিত্রের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রদর্শনীর তত্ত্বাবধায়ক র্যাচেল ওয়ার্ড বলেন, ‘একজন অভিজাত নারীকে পুনরায় সতেজ করে তুলতে যা প্রয়োজন তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে চিত্রের মাধ্যমে। আর এর থেকেই ধরে নেওয়া যায় যে, এটি আসলেই মেয়েদের জন্য তৈরি’।
ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে অভিজাত মঙ্গলীয় নারীর বৈশিষ্ট্যর যে পাণ্ডুলিপি রয়েছে তার সঙ্গে মিলে যায় বলে র্যাচেল ওয়ার্ডের দাবি।
ব্যাগের ওপরে খঁচিত নারী প্রতিকৃতির বর্ণনা দিয়ে র্যাচেল বলেন, ‘একজন অভিজাত পুরুষ বা শাসকের পাশে বসা নারীটি মঙ্গলীয় সংস্কৃতিকেই ফুটিয়ে তুলেছে। ইসলামি সংস্কৃতিতে এ ধরনের ছবি আঁকার কোনো সুযোগ নেই তাই এটি মঙ্গল শাসনেরই প্রতিকৃতি’।
ব্যাগটির বাহ্যিক সৌন্দর্য্য এতটাই মোহনীয় যে আধুনিক ব্যাগ নির্মাতারাও হিংসা করবেন।
সব থেকে পুরনো এই ব্যাগ সম্পর্কে এত কিছু জানার পরেও নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে এর ভেতরে কি ছিল। ব্যাগের ভেতরের জিনিস নিশ্চয় ব্যক্তিগত, তাহলে অজানাই থাক না অন্যের ব্যক্তিগত জিনিস। সূত্র: বিবিসি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজে/জেএম/এএল/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)