দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘এই অবৈধ আওয়ামী সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় টিকতে পারবে না।’

তিনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় ভবিষ্যতে প্রমাণ হবে আমাদের সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল।’

বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে শনিবার রাতে পেশাজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী প্রকৌশলী অ্যাসোসিয়েশনের (এ্যাব) সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ১৯ দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়া এ সব কথা বলেন। রাত ৯টায় এ মতবিনিময় শুরু হয়।

ড. এম আনোয়ারুল আজিমের নেতৃত্বে সভায় অর্ধশতাধিক প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে যতদিন সুস্থ অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখবেন, আমি ততদিন এ দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করে যাব ইনশা আল্লাহ।’

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের ফলে সরকার পরিবর্তন হয় না। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে সকল পেশাজীবীদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর ভবিষ্যতেই প্রমাণ হবে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ৫ শতাংশও ভোট পড়েনি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোট দেয়নি। এতেও প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগের কাছেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ছিল না। এই প্রহসনের নির্বাচন দেশ এমনকি বিশ্বের কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়নি।’

‘সারাদেশের পরিস্থিতি আজ মোটেও ভালো না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমাদের বসে থাকলে চলবে না।’

১৯ দলের প্রধান বলেন, ‘এখন সকল পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী আন্দোলনের কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে। পেশাজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেননি। অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে। তারা কোথাও বিচার পাচ্ছে না। বিচার বিভাগ থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরে দলীয়করণ করা হয়েছে।’

শনিবার রাতে গাজীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও সিনিয়র প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনার প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ টেক্সটাইল ও এগ্রিকালচারাল প্রকৌশলীরা এ মতবিনিময়ে অংশ নেন।

সিনিয়র প্রকৌশলীদের মধ্যে ফজলে এলাহী, মাজেদুল ইসলাম, রিয়াজ হাসান খন্দকার, আতাউল মাসুদ, আবদুল হালিম, আবদুস সোবহান, আবদুর রউফ, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, শাহ আলম, হাসিন আহমেদ, কাজী মুহাম্মদ সুফিয়ান, মাসুদ আহমেদ, একরামুল হক রোকনী, রেজাউল করীম, মঞ্জুরুল ইসলাম, আবুল কাশেম, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, এসএম গালিব, নুরুল ইসলাম নুরু, রেজা মামুন, গোলাম মওলা, শাহজাহান আলী, খালেদ এইচ চৌধুরী, আবদুল হাকিম, জসিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়াও বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি ও ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপি চেয়ারপার্সন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় করছেন। ইতোমধ্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে-ডিইউজে), জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গেও আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ওই সব বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পেশাজীবীদের মতামত নেন তিনি।

এদিকে, প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। এ সময় ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল মান্নান ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবেদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৪)