বেনাপোলে পণ্য নিলাম না করতে আবেদন
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি : গত তিন মাসের (নভেম্বর-জানুয়ারি) পণ্য নিলাম না করতে বেনাপোল কাস্টমসে জমা পড়েছে মোট ৩৬২টি আবেদন। কাস্টমসের নিয়ম অনুযায়ী পণ্য আমদানির ৩০ দিনের মধ্যে তা বন্দর থেকে ছাড় করাতে হবে।
আবেদনে আমদানিকারকরা উল্লেখ করেছেন, দেশে এখনও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে চলছে মন্দাভাব। বন্দর থেকে পণ্য ছাড়িয়ে বিক্রি করা না গেলেও দিতে হবে ব্যাংক সুদ। এ অবস্থায় এখন পণ্য ছাড় করালে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
পুরান ঢাকার আমদানিকারক রিয়া এন্টারপ্রাইজ গত বছরের নভেম্বর মাসে আমদানি করে কেমিক্যাল পণ্য। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও তারা পণ্য দেরিতে ছাড় করানোর জন্য সময় চেয়ে আবেদন করে বেনাপোল কাস্টমসে।
আমদানিকারকের স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুলতান মাহামুদ বিপুল দ্য রিপোর্টকে জানান, ব্যবসায়িক মন্দার কারণে আমদানিকারক পণ্য নিতে চাইছেন না। কারণ এখন পণ্য নিলে তাদের লোকসান গুনতে হবে। এ জন্য সময় চেয়ে কাস্টমসে আবেদন করা হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সাধন কুণ্ডু জানান, ‘গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমাদের কাছে ৩৬২টি আবেদন জমা পড়েছে। কাস্টমসের নিয়ম হলো আমদানি করার পর ৩০ দিনের মধ্যে পণ্য ছাড় করাতে হবে। তা না হলে আমরা নিলাম করে থাকি। কিন্তু দেশে ব্যবসায়িক মন্দাভাব থাকায় ব্যবসায়ীরা পণ্য ছাড় করাতে সময় চাচ্ছেন। কাস্টমসও ব্যবসায়ীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে সময় দিচ্ছে ।’
তিনি আরও জানান, ‘ইতোমধ্যে আমরা ব্যবসায়ীদের ৭ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় দিচ্ছি। তবে এ জন্য তাদের বন্দরের ভাড়া দিতে হবে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এই বন্দর দিয়ে ৫ হাজার ৪৫৩ কোটি ৮ লাখ টাকার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪৯ দশমিক ৯৫ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আগের ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে আমদানি হয়েছিল ৪ হাজার ৭২৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার ২ লাখ ১ হাজার ২৩১ মেট্রিক টন পণ্য।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে থেকে এলসি খোলায় মালামাল আমদানি করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ এলসি খোলার পর নির্দিষ্ট সময় থাকে পণ্য আনার। না আনলে ব্যাংকের সুদ গুনতে হয়। এ জন্য পণ্য আমদানি করা লেগেছে। তবে বর্তমানে পণ্য এনেও তারা সময়মতো তা নিতে পারছেন না। কারণ দেশে বাণিজ্যে চলছে চরম মন্দাভাব।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়িক মন্দাভাব থাকায় এখন আমদানিকারকরা পণ্য আনা কমিয়ে দিয়েছেন। যারা আনছেন, তারাও পণ্য ছাড় করাতে সময় নিচ্ছেন।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক ড. আনোয়ার মল্লিক জানান, ‘বন্দরে এখন কোনো পণ্যজট নেই। তাই কাস্টমস পণ্য ছাড়ে সময় দিলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। তবে এ জন্য বন্দরের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে।’
তবে তিনি বলেন, প্রতিবছরই ব্যবসায়ীরা এ ধরনের আবেদন করেন সরকারের সুবিধা পাওয়ার জন্য।
(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এমএইচও/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৪)