দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল  ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার নতুন একটা সুর তুলেছে জঙ্গিবাদ। বিএনপি না কি জঙ্গিবাদের উসকানি দিচ্ছে। অথচ জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে কীভাবে সেটি তারা খুঁজে বের করছেন না। যাদের এই অভিযোগে ধরা হচ্ছে তাদের তো মেরে দিচ্ছেন। কোনো তদন্ত নেই।’

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এর আয়োজন করে ‘ওবায়দুল রহমান স্মৃতি সংসদ’। 

জঙ্গিবাদের কথা বলে সরকার ভয়ঙ্কর আগুন নিয়ে খেলছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারাবিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখুন এই জঙ্গিবাদ ইস্যু তৈরি করে কত রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। কত জাতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সুতরাং জঙ্গিবাদকে তলিয়ে না দেখে একদফা বলে যাচ্ছেন বিএনপি উসকানি দিচ্ছে। এতে সমস্যার সমাধান হবে না।’

জঙ্গিবাদকে নির্মুল করতে হলে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সরকার জঙ্গিবাদ নির্মুলে আন্তরিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, এই ইস্যুটিকে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে সব অমীমাংসিত ইস্যুতে চুক্তির আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সঙ্গে চুক্তি হবে দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে। মাথা নিচু করে কোনো চুক্তি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, তিস্তায় পানি নেই। ৫৪টি নদীতে অবৈধভাবে বাধ দেওয়া হয়েছে। এগুলোর বিষয়ে কোনো চুক্তি হবে না। অথচ অন্য চুক্তি হবে। তা জনগণ মেনে নেবে না। সব চুক্তি জনগণের সামনে প্রকাশ করে তাদের মতামত নিতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। উনারা সমাবেশ করবেন আর আমরা ঘরের মধ্যে ক্লোজড ডোর মিটিং করতেও অনুমতি নিতে হবে। নির্বাচন করবেন ভালো কথা, এর জন্য আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সভা সমাবেশ করার মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। তাহলে নির্বাচন হবে, না হলে নির্বাচন হবে না। বর্তমান অবস্থা রেখে কোনো নির্বাচন হবে না।’

বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চায় জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেটি অবশ্যই নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের একটি নির্বাচন হতে হবে। অন্যথায় এদেশের মানুষ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।’

কে এম ওবায়দুর রহমানকে গণতন্ত্রের প্রবক্তা অভিহিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। তিনি যেই ধারার রাজনীতি করতেন তা বর্তমান রাজনীতিতে প্রায় বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন তা জনগণ চিরদিন মনে রাখবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও আয়োজক সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, শ্যামা ওবায়েদ প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এপি/মার্চ ২২, ২০১৭)