দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিনা মামলায় ২ নারীকে ১৩ ঘণ্টা আটক ও দুধের শিশু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার অভিযোগে মাদারীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ ও এসআই মাহতাব হোসেনকে অবিলম্বের প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এর আগে তলবের প্রেক্ষিতে বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে এ দুজন আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। কিন্তু ক্ষমার আবেদন নাকচ করে এদিন দুপুরে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

এছাড়া একইসঙ্গে ৮ মে’র মধ্যে এ ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত বলেছেন, এখনই ক্ষমা নয়। আগে তদন্ত রিপোর্ট আসুক। তারপর দেখা যাবে।

রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওয়াজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ। আর দুই পুলিশের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী সাজাওয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। পরে আলতাফ হোসেন আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার হাইকোর্টে ২০ মার্চ জনস্বার্থে এক রিট আবেদন করেন। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পরদিন দুই কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে অমানবিকভাবে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, মাদারীপুর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করা হয়।

ওইদিন আদেশের পর আইনজীবী রানা কাওসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১২ মার্চ, রবিবার সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। পনির মামলার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। এতে এসআই মাহতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পড় দেয়। এক পর্যায়ে পনির পুলিশের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।

এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরে মূল্যাবান আসবাবপত্র ও রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলে। এক পর্যায়ে পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।’

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এপি/মার্চ ২৯, ২০১৭)