কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জেলার রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান থানা সীমান্তের কর্ণফুলী নদীর কাছে হাত, পা ও চোখ-মুখ বাঁধাবস্থায় মৃতদেহটি পড়েছিল। পরিবারের সদস্যরা সেটি নুরুর মৃতদেহ বলে নিশ্চিত করেছেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে রাওজান থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে।
রাউজান থানার ওসি মোহাম্মদ কেফায়েত উল্লাহ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ছাত্রদল নেতা নুরুর ভগ্নিপতি জাফর আহমেদ ঘটনাস্থল থেকে পৌনে ৩টার দিকে লাশটি নূরুর বলে শনাক্ত করেন।
তিনি জানিয়েছেন, নুরুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এদিকে নুরু হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল যৌথ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রামে নাসিম ভবনের সামনে।
রাউজান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেফায়েত উল্লাহ জানিয়েছেন, বাঘোয়ান এলাকায় নদীর ধারে একটা লাশ পড়ে আছে খবর পেয়ে তা উদ্ধার করতে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে আমরা কাউকে আটক করিনি। এখন পুলিশ জঙ্গি ইস্যূ নিয়েই ব্যস্ত। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতারে আমাদের কোনো অভিযান চলছে না।
উল্লেখ্য, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে সাড়ে ১১টায় নগরীর চকবাজার থানার কাতালগঞ্জস্থ বাসা থেকে নূরুল আলমকে হ্যাণ্ডকাপ পরিয়ে ৮/১০ জন সাদা পোষাকধারী পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নূরুল আলমের ভাগ্নি মো. রাশেদ। তিনি জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ১০ জন লোক আসে। তারা পাঁচজন পুলিশের পোশাক পরা ছিল আর ৫ জন সাদা পোশাকে ছিল। আমার মামার নামে ওয়ারেন্ট আছে বলে তাকে হ্যাণ্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, ছাত্রদল নেতা নুরুর নামে হত্যা, নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাউজান থানায় ৮/১০টি মামলা রয়েছে। কয়েকটি মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ছাত্রদল নেতা নূরুল আলম নুরুকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে।
তিনি বলেছেন, ‘রাতে তাকে ধরে নেওয়ার পর থেকে আটকের বিষয়টি পুলিশ স্বীকার না করায় আমরা এমন আশঙ্কাই করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে।’ তিনি এভাবে ধরে নিয়ে গুম হত্যা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা নুরু হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিম ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রদল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর বিএনপির সভাপতি ডাক্তার শাহাদাত হোসেন। মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যৌথভাবে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জেডটি/মার্চ ৩০, ২০১৭)