চট্টগ্রাম অফিস : পুলিশ পরিচয় দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার পর নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম নূরু (৪৫)। কিন্তু হত্যা মামলা দায়ের করতে সাহস পাচ্ছে না তার পরিবার।

 

তাই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নূরুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা দায়ের করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।

তবে রাউজান থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ওসি কেফায়েত উল্লাহ নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

রাত ১২টায় প্রতিবেদকের সাথে দীর্ঘ আলাপকালে ওসি বলেন, আমি নিজেই ফোন করে নূরুর স্ত্রীকে মামলা দিতে বলেছি। কিন্তু তিনি কিংবা তার পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হচ্ছেন না। এবং নূরুর বোনের সাথেও আমার কথা হয়েছে। তারা বলেছে, এ হত্যার ব্যাপারে তারা মামলা করবেন না। তারা আল্লাহর কাছে এ ঘটনার বিচার চান।

ওসি বলেন, ‘আমাদের (পুলিশ) পরিচয় দিয়ে কে তাকে নিয়ে গেল আমরা তা তদন্ত করে দেখবো। আমি সেদিনই বলেছি, আমরা কোন অভিযান চালাইনি। এবং নূরুকে আটক করিনি। কিন্তু তার পরিবার বলছে রাউজান থানার পরিচয় দিয়ে তাকে নিয়ে গেছে। বিষয়টি দুঃখজনক। আমি হলফ করে বলতে পারি আমরা (থানার পুলিশ) কেউ এ ঘটনার সাথে জড়িত নই। এই ছেলেকে আমি চিনি না। তবে তার পদবী সম্পর্কে আমি জানি। কেন আমরা তাকে মারবো? তবে কে এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা তা বের করবো। আমাদের তদন্ত চলছে।’

এদিকে খবর নিয়ে জানা গেছে, নিরাপত্তাহীনতার কারণে নূরুর স্ত্রী থানায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না। আর মামলা করলে তাতে পুলিশকেই বিবাদী করতে হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা থানায় নেবে কিনা তাও সন্দেহ পরিবারের। এসব বিষয় চিন্তা করে পরিবার মামলা দায়ের থেকে বিরত থাকছেন বলে সূত্র জানায়।

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের চিন্তা ভাবনা চলছে বলে বিএনপি নেতারা জানান। শুক্রবার রাতে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘পরিবার মামলা না করলেও দলীয়ভাবে আদালতে মামলা করা যায় কিনা সে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে গিয়াস ভাইয়ের (গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী) সাথে শনিবার বসবো। উনার অনুমতি পেলে নূরু হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।’

বুধবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর চকবাজার বাসা থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে নূরুল আলম নূরুকে আটক করে নিয়ে যায় ৮/১০ জন সাদা পোশাকের লোক। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার রাউজানের বাঘোয়ান এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এআরই/এনআই/এপ্রিল ০১, ২০১৭)