দিরিপোর্ট প্রতিনিধি : ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ নামে নতুন একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত এক বৈঠকে বৃহস্পতিবার নতুন ব্যাংকের অনুমতি দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি হবে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব-বিশেষায়িত ব্যাংক। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এ ব্যাংকের প্রস্তাবক। পল্লী এলাকার জনগণকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করা এবং পল্লী এলাকায় বিনিয়োগ বাড়ানোই এ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হবে।’

তিনি জানান, ‘খুব শিগগিরই এ ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় আইন-কানুন চূড়ান্ত করতে এটি আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে এবং আগামীতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এটি সংসদে উঠবে।’

মুহিত বলেন, ‘বিশেষায়িত ব্যাংকের এ প্রস্তাবটি অতি সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠান। আমি ভেবেছিলাম, সময় এত অল্প যে, এটি করা সম্ভব হবে না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভগের সচিব ড. আসলাম ইসলাম অতি অল্প সময়ের মধ্যেই মূল প্রস্তাবটি পরিমার্জন করে একটি বিশেষায়িত ব্যাংকের খসড়া হিসেবে এটি সভায় উপস্থাপন করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পটির ধারণা থেকে এ ব্যাংকটি স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে গ্রামীণ ব্যাংকও স্থাপিত হয়েছিল অধ্যাপক ইউনূস কর্তৃক পরিচালিত ‘গ্রামীণ ঋণ প্রকল্প’ থেকে। এর উদ্দেশ্য ছিল জামানতবিহীন ঋণ প্রদান। কিন্তু পরবর্তীতে এটা শুধু গ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি।’

গ্রামীণ ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে এ ব্যাংকটি স্থাপন করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, ‘না, এটা কোনো বিকল্প ব্যাংক নয়।’

‘এ ব্যাংক স্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি ছিল’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপত্তি ছিল কমার্শিয়াল ব্যাংকের বিষয়ে, এ বিষয়ে আমাদেরও আপত্তি ছিল।’

সরকারের শেষ সময়ে তড়িঘড়ি করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক হচ্ছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি একটি ভাল প্রজেক্ট।’

ব্যাংকটির প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, ব্যাংকটির অনুমোদিত মুলধন হবে ১ হাজার কোটি টাকা

ও পরিশোধিত মুলধন হবে ২০০ কোটি টাকা। এতে সরকারি শেয়ারের পরিমাণ হচ্ছে ৫১ শতাংশ এবং বাকী ৪৯ শতাংশ বেসরকারি খাতে থাকবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন ১৫ জন সদস্য । এরমধ্যে ৮ জন সরকারি ও বাকী ৭জন বেসরকারি প্রতিনিধি থাকবেন। ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতাধীন সমবায় সমিতিসমূহ এ ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার হবে এবং এর বাইরে অন্য কোনো সমবায় সমিতি এর শেয়ার হোল্ডার হতে চাইলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি লাগবে।

সমবায় সমিতিকে শেয়ারহোল্ডার করার ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ করা হবে কি না জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, ‘সমবায় সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এগুলো সব অরাজনৈতিক।’

(দিরিপোর্ট২৪/এসআর/এআইএম/এমডি/নভেম্বর ০৭, ২০১৩)