নুরু হত্যায় পুলিশসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে বাসা থেকে আটক করে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরুকে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে রাউজান থানার এক এসআইসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নুরু হত্যাকাণ্ডের ১২দিন পর বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজের আদালতে নিহত নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তার এ অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে এ হত্যার ব্যাপারে রাউজান এবং নগরীর অন্য কোন থানায় মামলা হয়েছে কিনা তা আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার ও সিএমপি কমিশনারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ২০ তারিখে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদালত প্রাঙ্গন থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নুরুকে হত্যার দায়ে যাদের নাম অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন-রাউজান থানার নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শেখ মোহাম্মদ জাবেদ ও রাউজানের সরকার দলীয় সন্ত্রাসী বাবুল মেম্বার, খালেক মেম্বার, জসিম, সেকান্দর, নাসের প্রকাশ অরফে টাইগার নাসের, এমরান, মোহাম্মদ হাসান, নুরুল ইসলাম, লিটন, মেহেদি হাসান, ভূপেষ বড়ুয়া ও রব্বানী।
বাদি পক্ষের আইনজীবী এনামুল হক জানান, বাদি সুষ্ঠু বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় থানায় কোন মামলা দায়ের করেননি। তাই তিনি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা জেনেছি। ইতোমধ্যে রাউজান থানা পুলিশ অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলেও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন তারা এ মামলার তদন্ত করবেন না। এতে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আমরা বাদি পক্ষ তাতে সন্তুষ্ট।
উল্লেখ্য, ২৯ মার্চ (বুধবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর চকবাজার থানার গনি বেকারী এলাকার বাসা থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নূরুল আলম নূরুকে আটক করে নিয়ে যায় ৮/১০ জন সাদাপোষাকের লোক। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামের খেয়াঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে নুরুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নুরুর বাড়ি রাউজান উপজেলার গুজরা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কমলার দীঘিরপাড় এলাকায়। নুরু কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেফায়েত উল্লাহ জানিয়েছিলেন, তার মাথায় গুলির চিহ্ন আছে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা। তার পরণে ছিল লুঙ্গি। শার্ট দিয়ে চোখ বাঁধা। মুখের ভেতর ওড়না ঢোকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপ্রিল ১২, ২০১৭)