চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের মুছে ফেলা বাংলা নবববর্ষের সেই দেয়াল চিত্র (মুর‌্যাল) পুনরায় অঙ্কন করেছে চট্টগ্রাম চারুকলা ইন্সটিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর বাদশা মিয়া সড়কের আর্ট কলেজ সংলগ্ন পাহাড়ী দেয়ালে এ চিত্র অঙ্কনের কাজ করে ইন্সটিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা।

চারুকলার শিক্ষার্থীরা জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে রাত দিন নিরলস পরিশ্রম করে দেয়াল চিত্রগুলো এঁকেছিলো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে একদল দুষ্কৃতকারী মোটরসাইকেল যোগে এসে আকষ্মিক সেই দেয়ালের চিত্রগুলোতে পোড়া মোবিল (কালো তেল) ছুঁড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

তারা আরও জানায়, প্রতিষ্ঠার চার দশকে চট্টগ্রাম চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে সড়কে আঁকা দেয়াল চিত্রে এভাবে কেউ কালিমা লেপন করেনি। বেশ কিছুদিন যাবৎ কিছু মৌলবাদি গোষ্ঠি পহেলা বৈশাখ উদযাপন, বিশেষ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিলো। যারা কাপুরুষের মতন রাতের আঁধারে দেয়াল চিত্রে কালি ছুড়ে পালিয়ে যায় তারা আর যাই হোক নিশ্চত ভাবেই বাঙ্গালি জাতিয়তাবাদে বিশ্বাসী হতে পারে না।

চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লুবণা বলেন, ‘বৈশাখী উপলক্ষে আমরা বেশ কিছুদিন ধরে মধ্যরাত অবধি চারুকলা ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের নির্দেশনায় নানান শিল্পকর্ম চিত্রায়িত করছি। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমরা চারুকলা ইনস্টিটিউটের সড়কের বিপরীতের পাহাড়ের সঙ্গে লাগোয়া দেয়ালে ঐতিহ্যবাহী ‘সাঁওতালি পটচিত্র’ এঁকে যে যার মত বাসায় চলে গেলেও কয়েকজন ক্যাম্পাসে ছিলাম। কয়েকজন দৃর্বৃত্ত রাতের অঁধারে এসে মবিল দিয়ে সে চিত্র ঢেকে দেয়। কিন্তু এতে আমাদের দমাতে পারবে না। আমরা আবারও সে দেয়ালে চিত্র ফুটিয়ে তুলেছি।

চারুকলার শিক্ষার্থী সৈকত চৌধুরী দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কতবার খুন করবি? জন্মাবো আবার, বলবো বার বার এই বাংলা আমার ‘

দেয়ালচিত্র মুছে ফেলার ব্যাপারে সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেন, এটি সৃষ্টির বিরুদ্ধে ধ্বংস। মানুষের শৈল্পিক ও নান্দনিক অনুভুতি বুঝতে পারার কারণে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এআরই/এপ্রিল ১৩, ২০১৭)