চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ইসলাম ধর্মকে জঙ্গি ধর্মে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “জঙ্গিবাদ শুধু আমাদের দেশীয় সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। ’৭১ সালের পর থেকে যারা দেশকে বাধাগ্রস্থ ও অকার্যকর করতে চেয়েছে তারাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুপে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।’

চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা (যারা দেশকে বাধাগ্রস্থ ও অকার্যকর করতে চায়) প্রথমে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে। তারপর বিভিন্ন ধর্মের লোকদের হত্যার চেষ্টা করেছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠানের সাথে এদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদ, মাদকরোধে জনসচেতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা সরকারিভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও মসজিদের ইমামসহ জনপ্রতিনিধিদের জনসচেতনতায় কাজ করতে হবে। তাহলে দেশ থেকে জঙ্গি ও মাদককে রোধ করা সম্ভব হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশীয় জঙ্গিদের যারা অর্থের যোগান দিচ্ছে আমরা তাদের চিহ্নিত করছি। যে সকল এনজিও জঙ্গিদের অর্থে যোগান দিচ্ছে তাদের ব্যাপারেও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’

দেশে মাদকের আগ্রাসন বিষয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘একসময় ভারত থেকে ফেনসিডিল আসত। এই ফেনসিডিল আসা বন্ধে ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সেখানে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি। তারা বিভিন্ন সীমান্তে ফেনসিডিল উৎপাদন বন্ধ করেছে। তারা সীমান্তে বেশ কড়াকড়ি করছে যাতে ফেনসিডিল না আসে। এর ফলে ভারত সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল আসা আমাদের দেশে অনেকখানি কমে গেছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘ইয়াবা আসা বন্ধে আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও কথা বলছি। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাদের নীতির জন্য হোক কিংবা তারা একটু স্লো (ধীরগতিতে) চলে সেজন্য হোক, আমাদের সঙ্গে কথা বলার পরেও আমরা তাদের কাছ থেকে সুফল পাচ্ছি না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টিম, বিজিবি নিয়মিত মিয়ানমারে যাচ্ছে। তারাও আসছে। কথাবার্তা চলছে যাতে সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আদান-প্রদান না হয়। বিজিবি, কোস্টগার্ডও সচেতন আছে যেন ইয়াবাসহ কোনো ধরনের মাদক আমাদের দেশে না ঢুকে।’

গ্রেফতার করে কিংবা আইন প্রয়োগ করে মাদক বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এজন্য সামাজিক বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন-চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, র‌্যাব ও বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন উপজেলার চেয়্যারম্যানবৃন্দ।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/এপ্রিল ১৬, ২০১৭)