আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ  প্রতিনিধি : বর্ষা মৌসুম শুরু না হতেই সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত সাত দিন যাবৎ সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সদর উপজেলার বাহুকা ও কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা পয়েন্টে প্রচণ্ড স্রোত ও ঘুর্নাবর্তের সৃষ্টির ফলে বড় বড় ফাটল ধরে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। সাত দিনে ৩টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি যমুনায় বিলীন হয়ে  গেছে।   বাহুকা   পয়েন্টে   বর্না   নিয়ন্ত্রণ   বাঁধে   ফাটল   ধরেছে   যেকোনো   মূহুর্তে বাঁধ ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে  স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ওই সকল এলাকার জনগণকে আতঙ্কিত না  হবার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ভাঙ্গনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে শিমলা, পাঁচঠাকুরী, দুম্বারপাড়া, বাঘমোড় অনেক আগেই চলে গেছে যমুনা নদীর গর্ভে। সদর উপজেলার বাহুকা, কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ও বাওই খোলা কোনো রকমে টিকে থাকলেও এবারের ভাঙ্গনে পুরোটা বিলীন হয়ে যাচ্ছে যমুনা নদীর বুকে। নদীর পানি আরো বাড়তে শুরু করলে এসব গ্রামের সাথে বাকী গ্রামগুলো বিলীন হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসীর মধ্যে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যার ও সমাজ সেবক রেজাউল করিম রেজার অভিযোগ, স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণেই এ অঞ্চলের মানুষ আজ এমন শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একটি বস্তাও ফেলেনি, ফলে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েই চলছে। বাহুকা পয়েন্টে ব্রক্ষপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে আশ্রিত মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। অনেক দরিদ্র মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে।

স্থানীয় পাঁচ ফাকুরী গ্রামের বাসিন্দা সেকেন্দার আলী এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত ২৫ বছরে ৪ বার বাড়ি ঘর যমুনায় ভেঙ্গেছে। এখন অন্যের জায়গাতে বার্ষিক ৫ হাজার টাকায় জমি ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে থাকছি। কিন্তু যেভাবে নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে বর্তমানে যা সহায় সম্বল আছে তা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

এলাকাবাসি ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ণ বোর্ড সুত্রে জানা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে এই এলাকার নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি করে। কিন্তু বাহুকা পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল ধরেছে যেকোনো মূহুর্তে বাঁধ ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেছেন- ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভিত্তিতি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে পিএসসিতে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এপ্রিল ২৪, ২০১৭)