দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বন্যাপ্লাবিত হাওরের ৬ জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মকর্তাদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

সচিবালয়ে বুধবার (২৬ এপ্রিল) হাওরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আজকে ছয়টি জেলায় এই মন্ত্রণালয়ের যারা কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের সব ছুটি বাতিল করেছি। স্ট্যান্ডবাই থাকার অনুরোধ করেছি। কোনরকম ছুটি নেই। বানভাসী মানুষের পাশে থেকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করার জন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’

এছাড়া আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত হাওর অঞ্চলে ৩ লাখ ৩০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে বিনামূল্যে চাল ও ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হবে। এছাড়া ১০ টাকা কেজি দরে সুলভমূল্যে চাল বিতরণ ও ওএমএস কার্যক্রম চলবে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে গত ২৯ মার্চ সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের হাওর অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। সরকারি হিসাবে বন্যায় প্রায় ২ লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এক হাজার ৭৬ টন মাছ মারা গেছে, হাঁস মারা গেছে ৩ হাজার ৮৪৪টি।

তিনি বলেন, সরকারের কাছে পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে, কেউ না খেয়ে মারা যাবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘একটি মানুষও যেন না খেয়ে মারা না যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা জানি, কৃষকের এই সমস্যা ২-৪ দিন বা ২-৪ মাসের মধ্যে কাটিয়ে ওঠা কোন মতেই সম্ভব না। আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত তাদেরকে খাদ্যসহ সব রকমের সাহায্য দেব।’

হাওরে বিভিন্ন এনজিও ঋণের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এনজিওরা অনেক জায়গায় চড়া সুদে ঋণ দিয়েছেন। তারা বারবার তাদেরকে এই সুদের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছেন। এখন তারা কষ্টে আছেন-তাদের উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ ও আগামী এক বছর সুদ নিয়ে কৃষকদের উপর যেন কোন চাপ সৃষ্টি না করার জন্য এনজিওদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।

হাওর অঞ্চলের মানুষ কৃষি পুনর্বাসন, বিদ্যুৎ বিল এক বছরের জন্য মওকুফ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা, শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ করা, বিল-হাওর ইজারামুক্ত করা, বিভিন্ন বিভাগ ও দফতরে খালি পদে নিয়োগ, স্বল্প-মধ্য-দীর্ঘ মেয়াদি পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, সময়মতো ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতের ব্যবস্থা, মাছের পোনা অবমুক্ত করা, নারীদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে বলেও জানান মায়া।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘এই সব দাবির বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। যেগুলো অন্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়, সেক্ষেত্রে আমরা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করবো। যেমন- বিদ্যুতের বিল দিতে পারবে না। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/এপ্রিল ২৬, ২০১৭)