খুলনা ব্যুরো : খুলনায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা অভিযোগ করে বলেছেন, হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের কাছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা  প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখিন হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৫নং ওয়ার্ড পুলিশিং কমিউনিটি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাজী শফিকুল ইসলাম (মিঠু কাজী)।

সংবাদ সম্মেলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি-সংবলিত ব্যানার ব্যবহার করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শফিকুল ইসলাম ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আমিনুল ইসলাম মুন্নাকে হাইব্রিড আওয়ামী লীগার, মাদক সম্রাট, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এই হাইব্রিড আওয়ামী লীগারের (মো. আমিনুল ইসলাম) কাছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ আজ হুমকির সম্মুখিন।’

নিজেকে ও নিজের পরিবারকে জয় বাংলার সৈনিক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক দাবি করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই আমিনুল ইসলাম মুন্না এরশাদ শিকদারের দোসর মোসলেম সরদারের সঙ্গে জাতীয় পার্টির একটি ওয়ার্ডের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। একজন চালক থেকে আওয়ামী লীগার হয়ে আজ শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।’

এ ছাড়াও শফিকুল ইসলাম সুনির্দিষ্টভাবে কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ওয়াসার নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন।

শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, আমিনুল ইসলাম মুন্নার এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি এবং তার পরিবার হুমকির সম্মুখিন হয়েছেন। এ ছাড়া মুন্নার মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করার কারণে তাকে পুলিশকে দিয়ে ১৮ ঘণ্টা থানা হাজতে আটকিয়ে রাখা বলেও জানান শফিকুল। পরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান এমপি টেলিফোন পেয়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।

দলীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন কি না? সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, মহানগর সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমানের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। আগামী রবিবার দলের বর্ধিত সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মুন্না কাউন্সিলরের কাছে প্রকৃত পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। আর মুন্না দলের নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছে।’

শফিকুল সুনির্দিষ্ট নাম ও পয়েন্ট উল্লেখ করে বলেন, ‘সব ধরনের মাদক ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়েছে এই হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতা (মুন্না)। সপ্তম শ্রেণি পাস করা একজন চালক আজ হাইব্রিড আওয়ামী লীগার হয়ে অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।’

কাজী শফিকুল ইসলাম মিঠু কাজী নিজেকে স্কুলজীবন থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত থাকার দাবি করে বলেন, ‘তারা পরিবার আওয়ামী পরিবার।’

নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করতে গেলেও খালিশপুর থানা পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন কাজী শফিকুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে ১৫নং ওয়ার্ড কাউনন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আমিনুল ইসলাম মুন্নার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করায় মিঠু কাজীকে দলে নতুন করে কোনো পদে রাখা হয়নি। মিঠু কাজী আগেও এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।

কাউন্সিলর মুন্না আরও বলেন, ‘মিঠু কাজী বর্তমানে সুস্থ নেই, তিনি অস্বাভাবিক হয়ে গেছেন।’

এ ছাড়া কাউন্সিলর মুন্না অবৈধ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এস/এম/এপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৭)