নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : ফতুল্লায় লিবিয়া পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে মানব পাচার চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় বিভিন্ন মাসুষকে আটকে রেখে আদায় করা মুক্তিপনের নগদ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ দুটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(২৭ এপ্রিল) দুপুরে তাদের আটক করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। আটককৃত ২জন হলো জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার মালঞ্চ এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে হযরত আলী (৩৮) ও ফতুল্লার পাগলা হাই স্কুল সংলগ্ন দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২২)।

পরে ওই দুই বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এ দুইজন ছাড়াও তাদের সহযোগী আরও দু’জনকে আসামী করা হয়েছে। যারা এখন পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। পলাতকরা হলেন, জামালপুরের মালঞ্চ এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে হারুন (৩৫) ও ফতুল্লার পাগলা এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে দুলাল হোসেনকে(২৮)। পলাতক দুইজন লিবিয়াতে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

মামলার বাদী নরসিংদী জেলার বেলাবো চরলক্ষ্মীপুর এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তার ছেলে মেহেদি হাসান হৃদয় ও প্রতিবেশী সেলিমকে ভালো চাকরির প্রলোভনে ৬মাস আগে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। গত ৫এপ্রিল দুলাল ইমো নাম্বার থেকে মিজানুরকে ফোন করে জানায় যে তার হেফাজতে মেহেদী ও সেলিম আছে। তাদের মুক্তি চাইলে জনপ্রতি ৫০ হাজার করে টাকা দিতে হবে। তখন দুলালের ভাই পরিচয় দেওয়া গ্রেপ্তারকৃত সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলা হয়।

পরে মিজানুর রহমান লিবিয়াতে ফোন করে মেহেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারে তাকে ও সেলিমকে হারুন ও দুলাল আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করছে। ফোনে প্রায় সেই নির্যাতনের শব্দও শোনানো হতো। গত ২২ এপ্রিল মিজানুর রহমান নগদ ৩০ হাজার টাকা ফতুল্লার পাগলা এসে সাইফুলকে দেয়। কিন্তু সেদিন রাতেই আরো ১লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে সাইফুল। কিন্তু মিজানুর রহমান অপরাগতা প্রকাশ করলে লিবিয়াতে মেহেদী ও সেলিমকে আরো মারধর করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে গত ২৬ এপ্রিল ফতুল্লার পাগলা হতে সাইফুলকে আটক করে। তখন সে স্বীকার করে তার ভাই দুলাল ও হারুন মিলে লিবিয়াতে অবন্থান করাকালে বাংলাদেশী বিভিন্ন নাগরীকদের অন্যায়ভাবে আটক রেখে মারধর করে আত্মীয়দের কাছ থেকে অন্তত ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা ইতিমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ও হযরত আলীর বাড়ি থেকে ৫লাখ টাকা উদ্ধার করে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কামাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, দুইজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। চক্রের অপর সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/এপ্রিল ২৭, ২০১৭)