প্রায় ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাদা শেখ লুৎফর রহমানের নামে ডেন্টাল কলেজ হচ্ছে গোপালগঞ্জে। এর মধ্য দিয়ে দেশের সরকারি ডেন্টাল কলেজের তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও একটি নাম। ফলে মোট সরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪টিতে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হতে পারে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ডেন্টাল কলেজটি স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৬৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। একনেক-এ প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে এটির বাস্তবায়ন কাজ শেষ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ ধরা হয়েছে- চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১০ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫১ কোটি ২৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৭ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অর্থায়নের বিষয়ে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আব্দুল মান্নান হাওলাদার দ্য রিপোর্টকে জানান, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দহীনভাবে সংযুক্ত অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরের আওতায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৯টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ সব প্রকল্পের জন্য থোক বরাদ্দ রয়েছে ৬ কোটি টাকা। ইতোমধ্যেই দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর একটি প্রকল্পের অনুকুলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। ফলে থোকে আর মাত্র ১ কোটি টাকা রয়েছে। প্রস্তাবিত শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে এর অনুকুলে বরাদ্দ প্রদানের বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের ১৫ কোটি জনসংখ্যার জন্য মাত্র ৩টি জেলায় ৩টি সরকারি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। ডেন্টাল সার্জনের অপ্রতুলতার জন্য রোগীরা পর্যাপ্ত ও উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে এক শ্রেণীর ডেন্টাল সার্জনের অত্যাধিক ফি এর কারণে দরিদ্র রোগীরা উন্নত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে দরিদ্র রোগীরা তাদের দাঁতের সমস্যার জন্য মূলত ওষুধের দোকানির পরামর্শের ভিত্তিতে ওষুধ সেবন করে থাকে। বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সঠিক ও উন্নত দন্ত চিকিৎসা প্রদানের জন্য সরকারি পর্যায়ে আরও একটি ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা প্রয়োজন। সেই বিবেচনায় গোপালগঞ্জে শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আনুপাতিক হারে অধিক সংখ্যক দাঁতের ডাক্তার তৈরি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া দন্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে রাজধানী শহরের উপর চাপ হ্রাস পাবে, এই চিকিৎসার ক্রমবর্ধমান শিক্ষার চাহিদা পূরণ হবে এবং চিকিৎসা ও অন্যান্য পেশার লোকদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, ৮ তলা ফাউন্ডেশনসহ ৪ তলা হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ বা একাডেমিক ভবন স্থাপন। স্টুডেন্ট হোস্টেল, ইন্টার্নি হোস্টেল, ডক্টরস ডরমেটরি, নার্সেস ডরমেটরি, মসজিদ, অডিটরিয়াম, অধ্যক্ষের বাসভবনসহ অন্যান্য আবাসিক ভবন ও আনুষাঙ্গিক আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালের জন্য আধুনিক মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র এবং যানবাহন ক্রয় করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এসআর/আরকে/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪)