দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : লাখো কণ্ঠে আবৃত্তি হল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা। সোমবার মহান মে দিবসে (১ মে) নজরুল চর্চাকেন্দ্র বাঁশরী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বিএনসিসির প্রায় ৫ হাজার সদস্য, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ আবৃত্তিতে অংশ নেন।

রেজাউল হোসাইন টিটুর নির্দেশনায় বিকেল ৪টা ৩৬ মিনিটে আবৃত্তি শুরু হয়। আবৃত্তি শেষ হয় ৪টা ৫০ মিনিটে।

কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী ও অনিন্দিতা কাজী উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ছাড়াও টেলিভিশন ও ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মানুষ আবৃত্তিতে অংশ নিয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘বিদ্রোহী’ কবিতা বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের একটি মাইলফলক। এই কবিতা হীনম্মন্যতা ও বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়তে ব্যক্তি, সমাজ, জাতি তথা বিশ্ব মানবতাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দীক্ষা দেয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম, প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমি আজ এই দিনে কাজী নজরুল ইসলামকে আরেকবার স্মরণ করছি। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ এই খবর দিচ্ছে তোমাকে আমরা বক্ষে ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণের পথে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছি।’

তিনি বলেন, ‘ওরা কারা, ওই জঙ্গিরা, ওই আগুন সন্ত্রাসীরা, ওরা মানুষ রূপী দানব। ওরা কাপুরুষ, ও পিছন থেকে ছুড়ি মারে। ওরা সমাজের কলঙ্ক। ওরা ধর্মের অপব্যাখ্যা করে, ইসলামকে বিপদে ফেলে, মুসলমানদের বিপদে ফেলে, মানবসমাজকে ক্ষত-বিক্ষত করে।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘তাই আজকে আরেকটা বিদ্রোহ চলছে। দেশ আজ এক বাঁকে, নব ইতিহাস সৃষ্টির মুখে, পুনর্জাগরণের পথে। সামরিক শাসকদের চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি ও অর্থনীতি, সামরিক শাসকদের চাপিয়ে দেওয়ার পুনর্বাসিত যুদ্ধাপরাধী চক্র, সামরিক শাসকদের লালিত মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ- এসবের বিরুদ্ধে একটা বিদ্রোহ চলছে। আমার সঠিক যাত্রা শুরু করেছি উল্টো পথের বিরুদ্ধে।’  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘লাখো কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতা পাঠ করে মহান মে দিবসে শ্রমিক জনতার প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে চাই।’

‘বাঁশরী’র সভাপতি মো. খালেকুজ্জামান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা এরপর প্রতি বছর বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করব। ২০২১ সালে বিদ্রোহী কবিতার শতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের সব ভাষায় সব দেশে ও বাংলাদেশের সব গ্রামে একই দিনে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করব বলে আশা করি। এটা অনেক অভিলাষী কথা, আশা করি সবাই মিলে তা বাস্তবায়ন করব।’

বিএনসিসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌস বলেন, ‘বিদ্রোহী কবিতার ভাব, ভাষা, আবেগ ও ম্যাসেজ আজকে আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রয়োজন। এ কবিতা আমরা দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এজন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’

বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী সুজিত মোস্তাফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোতাহার হাসানও বক্তব্য রাখেন।

লাখো কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ। আবৃত্তি অনুষ্ঠানটি এটিএন বাংলা সরাসরি সম্প্রচার করে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/এনআই/মে ০১, ২০১৭)