সাগর আনোয়ার দিরিপোর্ট২৪ : ৭ নভেম্বর ১৯৭৫। এদেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। যে দিনটিকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনীতি পতিত হয়েছিল নতুন এক অক্ষে। ৭ নভেম্বরকে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ‘সৈনিক হত্যা দিবস’ ও বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে। অন্যদিকে জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) এই দিনটিকে সিপাহী-জনতার গণ-অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালন করে।

জানা গেছে, জাসদের দুই অংশ ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক সেই ঘটনাকে স্মরণ করে এবারো দিনটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করবে।

৭ নভেম্বর সম্পর্কে জাসদের অন্যতম নেতা ও বর্তমান জাসদ (রব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, ৭ নভেম্বরের ঘটনার সঙ্গে দল হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ও ব্যক্তি হিসেবে কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে বেশি। কর্নেল তাহেরের পরিকল্পনা ও প্রতিষ্ঠিত ‘বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা’র সহযোগিতায় ঘটেছিল আলোচিত ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান। কিন্তু ৭ নভেম্বরের পর অভ্যুত্থানের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারেনি ‘বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা’। ওই সময়ে এর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নেন তৎকালীন কারামুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। পরিণতিতে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয় কর্নেল তাহেরকে।

জাসদ (রব) বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (৬৫ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, চতুর্থ তলা) আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব।

অন্যদিকে, জাসদের অন্য অংশ একই সময়ে রাজধানীর জিরো পয়েন্টের পাশে কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাসদ সভাপতি আসম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন এক বিবৃতিতে বলেছেন, কর্নেল তাহেরের অনুসৃত আদর্শের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হলে সংঘাত ও সহিংসতার অবসান হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কর্নেল তাহের সকল শ্রম-কর্ম-পেশার জনগণের প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে রাষ্ট্র-ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার নীতিতে বিশ্বাস করতেন। ১৯৭৫ সালে জাতিকে সংকটমুক্ত করার জন্য এ আদর্শের ভিত্তিতেই তিনি সিপাহী গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছিলেন। সেদিন অনেকের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে জাতি এ পথে এগুতে পারেনি। এতে দেশে সংকট স্থায়ীরূপ লাভ করে এবং অপরাজনীতর সূচনা হয়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আজও কর্নেল তাহেরের প্রদর্শিত পথ ধরে সব শ্রম-কর্ম-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ গঠন করে নির্বাচনকালীন সময়ে সে উচ্চকক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান করা হলে শুধু নির্বাচনকালীন সংকটই কাটবে না, সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংকটমুক্ত হবে।

একইভাবে জাসদ সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া ৭ নভেম্বর বিপ্লবের মূল নায়ক হিসেবে কর্নেল তাহেরকে অভিহিত করেন। পাশাপাশি প্রহসনের রায়ে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়েছে দাবি করে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর ফাঁসির দাবি করেন।

(দিরিপোর্ট২৪/এসআর/এইচএসএম/নভেম্বর ০৭, ২০১৩)