হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : সম্প্রতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যার কারণে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচঙে কমে গেছে হাঁসের বাচ্চার চাহিদা। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন এ ব্যবসায়র সাথে সংশ্লিষ্ট ওই পরিবারগুলো।

হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে এবং তা বিক্রি করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। শুধু ভাগ্য পরিবর্তনই নয়, স্বাবলম্বীও হয়েছেন তারা। ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিতও করে তুলেছেন অনেক পরিবার। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষিকাজ বা অন্যসব ব্যবসা ছেড়ে সারা বছর শুধু হাঁসের বাচ্চা ফুটানোতেই ব্যস্ত থাকে তারা। সেই সাথে দিন দিন আরও নতুন করে অনেকে এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু অসময়ে বন্যা হওয়ার কারণে দুর্বিসহ ‍দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

বুধবার (৩ মে) দুপুরে উপজেলার ভাটিপাড়া হাঁসের ক্ষেত গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার প্রায় সবাই অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চৈত্র মাস থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত বাচ্চা ফুটানোর উত্তম সময়। সারা বছর যে পরিমাণ বাচ্চা বিক্রি করা যায় তা এই সময়টাতেই করা যায়। কিন্তু এ বছর হঠাৎ করেই বন্যা দেখা দেওয়ায় সম্পূর্ণ এলাকায় কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে কোথাও হাঁসের বাচ্চা পালন করার কোনো উপযুক্ত জায়গা নেই। তাই বাচ্চার চাহিদাও নেই। ফলে এ ব্যবসায় জড়িত সবাই বিপাকে পরেছেন।

এদিকে অল্প পুঁজিতে অধিক লাভজনক হওয়ায় এ ব্যবসায় জড়িতরা অন্য কোন ব্যবসা বা কৃষি কাজে সম্পৃক্ত না হওয়ায় ভয়াবহ কষ্ট নিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে তারা। এমনকি আর্থিক অবস্থা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে এই কয়েক মাস ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ যোগানো নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

এ ব্যবসার সাথে জড়িত ভাটিপাড়া গ্রামের সুরেশ দাস দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ বছর হঠাৎ করেই বন্যা দেখা দেওয়ায় কেউই বাচ্চা পালন করতে পাচ্ছেন না। কারণ বাচ্চা পালন বা এগুলোকে রাখার জন্য কোনো জায়গা নেই। সম্পূর্ণ জায়গা পানিতে ডুবে গেছে।

খামারি অসিত দাস বলেন, ‘বাচ্চা পালন করে নিজের সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতাম। কিন্তু বন্যার কারণে এখন থেকে বেশ কয়েক মাস আমাদের বেকার সময় কাটবে। এ সময়টাতে কি করে সংসার চালাব আর কি করেইবা তাদের লেখাপড়ার খরচ চালাবো বুঝতে পারছি না।’

(দ্য রিপোর্ট/কেএনইউ/এপি/মে ০৩, ২০১৭)